দ. আফ্রিকায় ব্যবসায়ী সেলিমকে খুন করিয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশিরাই, দাবি পরিবারের

শহীদুজ্জামান সেলিম। দক্ষিণ আফ্রিকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে বুধবার নিহত হন তিনি।

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়া শহরে এক বাংলাদেশি আসবাবপত্র ব্যবসায়ী দুষ্কৃতকারীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন। তার নাম শহিদুজ্জামান সেলিম (৩৫)। ব্যবসায়ের মালামাল কিনে রাস্তার পাশে দাঁড়ানো অবস্থায় তাকে দুই আফ্রিকান সন্ত্রাসী গুলি করে হত্যা করে। আততায়ীরা ধরা পড়লেও নিহতের পরিবারের দাবি, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের জের ধরে দুই আফ্রিকান সন্ত্রাসীকে ভাড়া করে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে, এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে রয়েছে প্রবাসী কিছু বাংলাদেশির চক্রান্ত।

নিহত সেলিম বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার উলানিয়ান ইউনিয়নের আশা গ্রামের মৃত স্কুলশিক্ষক আব্দুল লতিফের ছেলে।

জানা গেছে, দেশে থাকাবস্থায় সেলিম ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০০১ সালে চারদলীয় জোটের মামলা-হামলার কারণে দেশ ছেড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়ে আসবাবপত্র ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িত হন। সেখানেই গত ১৯ বছর ধরে থিতু হয়ে ব্যবসা করছিলেন তিনি। তবে সম্প্রতি সে দেশে থাকা কিছু বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর সঙ্গে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব চলছিল তার। এর জের ধরেই সড়কে দাঁড়ানো অবস্থায় বুধবার (৫ আগস্ট) রাতে দুই সন্ত্রাসী খুব কাছ থেকে গুলি করে সেলিমকে হত্যা করে। ওই রাতেই দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ওই দুই হত্যাকারীকে আটক করেছে। তবে নিহতের পরিবারের দাবি, সেলিমকে হত্যার পেছনে প্রবাসী ওই বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা জড়িত। তারাই ওই দুই ব্যক্তিকে ভাড়া করে এ কাজে লাগিয়েছে।

নিহত সেলিমের স্ত্রী ও এক কন্যা রয়েছে মেহেন্দীগঞ্জ গ্রামের বাড়িতে। এছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকায় এক আফ্রিকান নারীকে বিয়ে করার পর সেখানেও তার একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তার মরদেহ দেশে আনার চেষ্টা চলছে বলে জানান স্বজনরা।

নিহত তছলিমের ভাই আসাদুজ্জামান মিলন ও স্থানীয় চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) হাবিবুর রহমান লিটন দক্ষিণ আফ্রিকায় নিহত সেলিমের বন্ধুদের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, সেলিমের সঙ্গে বাংলাদেশি কিছু ব্যবসায়ীর দ্বন্দ্ব চলে আসছিল দীর্ঘদিন ধরে। বিষয়টি নিয়ে তার পরিবারের সঙ্গেও একাধিকবার কথা হয়। ওই সময় তাদের সংস্পর্শ থেকে তাকে সরে থাকতে বলা হয়। মিলনের দাবি, ওই ব্যবসায়ীরাই ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে তার ভাইকে হত্যা করেছে। তাদের আটক করা হলে আসল ঘটনা বের হয়ে আসবে।

তারা আরও জানান, ঘটনার সময় মালামাল কিনে তা গাড়িতে নেওয়ার জন্য সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল সেলিম। এসময় আফ্রিকান দুই সন্ত্রাসী এসে বন্দুক চালিয়ে তাকে গুলি করে চলে যায়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পরপরই সে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ওই দুই সন্ত্রাসীকে আটক করে।