ঘুরে বেড়াচ্ছেন আইসোলেশনে থাকা করোনা রোগীরা!

 

হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালহবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া রোগীরা আইসোলেশনে না থেকে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্বাস্থ্যবিধি ও চলাফেরার নিষেধাজ্ঞা ভেঙে আইসোলেশন সেন্টার থেকে বেরিয়ে হাসপাতালে ও আশপাশে অনেক রোগীকে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। এতে করে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। বিষয়টি নিয়ে শহর জুড়ে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। প্রশ্ন উঠেছে হাসপাতালের নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে।

জানা যায়, জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য সদর আধুনিক হাসপাতালের নতুন ভবনের ৪র্থ, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলায় আইসোলেশন ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। যেখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন বেশ কয়েকজন করোনা আক্রান্ত রোগী। চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় কয়েকজন করোনা রোগীকে ভবন থেকে নেমে হাসপাতালের আশপাশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে দেখেন স্থানীয়রা।

প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, এ দৃশ্য শুধুমাত্র গত কয়েকদিন ধরেই হচ্ছে। বিকাল বেলা কিংবা সন্ধ্যার দিকে আইসোলেশন ওয়ার্ড থেকে রোগীরা বেরিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অনেকেই আবার আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গেও দেখা করছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আইসোলেশন সেন্টারের করোনা ওয়ার্ডের ভেতরে রোগীর স্বজনরা দেখা করতে এসেছেন। করোনা আক্রান্ত রোগীদের বিছানায় বসেই গল্পে মেতে উঠেছেন তারা।

অভিযোগ রয়েছে, প্রতিদিনই টাকার বিনিময়ে রোগীদের ভেতর থেকে বাইরে যাওয়ার সুযোগ করে দেন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা লোকজন। শুধু রোগীদেরই বের হতে দেওয়া হয় না, টাকার বিনিময়ে রোগীর স্বজনদেরও ওয়ার্ডের ভেতরে যেতে দেওয়া হচ্ছে। এতে করে করোনার ভয়ঙ্কর ঝুঁকিতে রয়েছে হাসপাতালের অন্য রোগীরা।

হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালসদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডের ইনচার্জ লিপি রানী জানান, আমি বাসায় কোয়ারেন্টিনে আছি। বিষয়টি শোনার সঙ্গে সঙ্গে কর্মীদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে এবং আইসোলেশন ওয়ার্ড তালাবদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শুধু চিকিৎসক ও নার্সরা নির্ধারিত সময়ে প্রবেশ করতে পারবেন। এছাড়া কোনও অবস্থায় রোগীদের আত্মীয় স্বজনরা দেখা করতে পারবেন না।

সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. শামীমা আক্তার জানান, করোনার রোগী ভর্তির পর আমাদের কোনও সমস্যা হয়নি। অভিযোগ শোনার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমাদের স্টাফদের গাফিলতি আছে। আর হবে না, বলে জানান তিনি।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হেলাল উদ্দিন জানান, করোনা রোগীদের গেটে তালা লাগানো থাকে। আমাদের হাসপাতালের স্টাফরা খাবার দেওয়ার সময় কয়েকজন বাইরে চলে যায়। বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।

জেলার সিভিল সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, হাসপাতালের একজন স্টাফ আইসোলেশনে আছে। সে নাকি ঘোরাফেরা করছে বলে শুনেছি। যেহেতু আপনি (সাংবাদিক) বিষয়টি জানিয়েছেন, ব্যবস্থা নেবো।