ফোর্স থাকলে দুই জনকেই রেসকিউ করতে পারতাম: পাটগ্রাম ইউএনও




ইউএনও কামরুন নাহারলালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের সামনে মো. শহীদুন্নবী জুয়েলকে গণপিটুনি দিয়ে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন আন্তরিক চেষ্টা চালিয়েছিল বলে দাবি করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুন নাহার। তিনি বলেন, ‘রেসকিউ করার মতো সিচুয়েশন ছিল না। আমার ফোর্স ছিল না। ফোর্স থাকলে আমি সেখান থেকে তাদের দুই জনকেই রেসকিউ করতে পারতাম।’ শনিবার (৩১ অক্টোবর) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ও সিদ্ধান্ত নিতে বেশি সময় লেগেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন, ‘আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে সময় লাগেনি। জনরোষের ওপর ভিত্তি করে আমাকে কাজ করতে হয়েছে।’

গুলি করার আদেশ না দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে ইউএনও বলেন, ‘আমি কোনও মানুষকে হার্ট করতে পারবো না, আঘাত করতে পারবো না। যেমন ভেতরের দু’জনকে আমার দেখার কথা, বাইরের হাজার হাজার মানুষকেও আমার দেখতে হবে। সেটার প্রেক্ষিতে আমি সময়ের আগেই ফায়ার ওপেনের নির্দেশনা নিশ্চিতভাবেই দেবো না। আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি, যেন ফায়ার ওপেনের নির্দেশনা দিতে না হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতির কারণে আমাকে সিদ্ধান্ত দিতে হয়েছে এবং আমি ফায়ার ওপেনের নির্দেশনা দিয়েছি।’

ঘটনাস্থলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিরা সঠিক সময়ে পৌঁছাতে না পারলেও অন্য এলাকা থেকে অচেনারা কীভাবে এলো, এমন প্রশ্নে ইউএনও বলেন, ‘এটা আমি আপনাদেরকে ওভাবে বলতে পারবো না। মানুষের যাতায়াত তো সীমিত করা হয়নি। ওই এলাকায় যেতে হলে অনুমতির প্রয়োজন হবে, এরকম তো কোনও আইন নাই।’

ইউএনও কামরুন নাহার আরও জানান, তারা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একজনকে উদ্ধার করে ন্যাশনাল ব্যাংকে নিয়ে যান। তখন সেখানে তাদের ওপরও হামলা হয়। এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তারা মনে করেছে দু’জন ব্যক্তিকে নিয়েই আমরা বের হয়ে গেছি। এজন্য তারা আমাদের পিছু নিয়েছিল।’

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) রাতে লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের সামনে বিক্ষুব্ধ জনতা শহীদুন্নবী জুয়েলকে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে তার শরীর আগুনে পুড়িয়ে দেয় উন্মত্ত জনতা। এ ঘটনায় শনিবার তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে নিহত জুয়েলের পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যা মামলা, ইউনিয়ন পরিষদ অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় চেয়ারম্যানের দায়ের করা ভাঙচুরের মামলা এবং পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশ আরও একটি মামলা দায়ের করেছে। এসব মামলায় অন্তত ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ওই এলাকার ৫০০ থেকে ৬০০ ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।

 

আরও পড়ুন:
হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার ৩ মামলায় গ্রেফতার ৬


জুয়েলের বিরুদ্ধে কোরআন অবমাননার প্রমাণ মেলেনি: গোয়েন্দা প্রতিবেদন

জঙ্গি সম্পৃক্ততা ছিল না, স্থানীয়রাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে: রংপুর বিভাগীয় কমিশনার

জুয়েলের এই পরিণতি মানা যায় না

বুড়িমারীতে জুয়েলকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় তিনটি মামলা (ভিডিও)

‘জুয়েলকে মসজিদের বাইরে আনার পর পরিস্থিতি এমন হবে ভাবিনি’

হত্যার পর পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি স্বজনদের

পিটিয়ে হত্যার পর পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনার ছায়া তদন্তে র‍্যাব

‘যুবককে হত্যার পর পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় একাধিক মামলা হবে’

পিটিয়ে হত্যা করে মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন

লালমনিরহাটে যুবককে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ