ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শওকত হত্যা মামলায় ৫ আসামির যাবজ্জীবন

আদালত প্রাঙ্গণে আসমিরাগত ২০১৪ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইলে চাঞ্চল্যকর শওকত আলী হত্যা মামলায় পাঁচ আসামির যাবজ্জীবন এবং তিন আসামির এক বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সফিউল আজম এই রায় দেন। এ সময় পাঁচ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিল। বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট বশির আহমেদ খান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

মামলার ঘটনার বিবরণে জানা যায়, জমিসংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে ২০১৪ সালের ১৩ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টার দিকে সরাইল উপজেলা সদরের সৈয়দটুলা জাহাঙ্গীরপাড়ার বাসিন্দা শফিকুর রহমান খন্দকার এবং মো. মোর্শেদ খন্দকারের নেতৃত্বে একদল লোক হামলায় অংশ নেয়। তারা সরাইল বিকাল বাজার এলাকায় দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আব্দুল বাতেন ও তার ছোট ভাই শওকত আলীর ওপর অতর্কিত হামলা করে। এ সময় দৌড়ে কোনোক্রমে আব্দুল বাতেন প্রাণে রক্ষা পেলেও আসামিরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে শতকত আলীকে গুরুতর আহত করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক শতকতকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত শওকত আলী সরাইল উপজেলা সদরের সৈয়দটুলা জাহাঙ্গীরপাড়ার বাসিন্দা।

ঘটনার পরদিন রাতে নিহতের বড়ভাই আব্দুল বাতেন বাদী হয়ে শফিকুর রহমান খন্দকার এবং মো. মোর্শেদ খন্দকারসহ নয় জনের নাম উল্লেখ করে সরাইল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার অন্য আসামিরা হলো– মো. সাহেদ আলম খন্দকার (৩৫), আব্দুল হাই (৪৫), মোবারক (৩০), আবুল কাশেম (৭০), হেলিম মিয়া (৩০), আবুল বাদশা (৫০) ও মামুন মিয়া (২১)। তাদের মধ্যে পুলিশ পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার আসামিরা হলো– শফিকুর রহমান খন্দকার, মো. সাহেদ আলম খন্দকার, আব্দুল হাই, আবুল বাদশা ও মামুন মিয়া।

অন্য চার আসামির মধ্যে আবুল কাশেম মারা গেছে এবং তিন জন পলাতক রয়েছে। তারা হলো– যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত মো. মোর্শেদ খন্দকার, মোবারক ও এক বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত হেলিম মিয়া।

মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘খুনের ঘটনাটি পরিকল্পিত ছিল।  সাক্ষ্য-প্রমাণ থাকলেও যাবজ্জীবন রায় হয়েছে। এই রায়ে আমরা হতাশ। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো।’

অন্যদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান বলেন, ‘মাত্র চার জন স্বজনের সাক্ষীর মাধ্যমে এই মামলা প্রমাণের চেষ্টা করা হয়েছে। ন্যায়বিচারের স্বার্থে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো।’