কিন্তু কনে বাড়িতে গেলেও জামিন প্রাপ্ত বর সজিব হোসেন (৩০) গিয়েছিলেন কারাগারে। বুধবার (২৫ নভেম্বর) সব ধরনের আইনি প্রক্রিয়া শেষে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. শাহজাহান আহমেদ।
আদালত ও মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ভাঙ্গাপুস্করনী গ্রামের এক তরুণীর বিয়ে হয় একই উপজেলার এক সৌদি প্রবাসীর সঙ্গে। তাদের চার বছরের একটি ছেলেও রয়েছে। ২০১৫ সালে প্রবাসীর স্ত্রীর (২৫) সঙ্গে মোবাইলফোনে পরিচয় হয় একই উপজেলার পারুয়ারা গ্রামের সজিব হোসেন লিটনের। এক পর্যায়ে লিটন বিয়ের কথা বলে ওই গৃহবধূর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। এসময় লিটন তার আপত্তিকর কিছু ছবি ও ভিডিও ধারণ করে, পরে তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন সময়ে ওই গৃহবধূর থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
তবে লিটনের চাহিদামতো আরও টাকা না দেওয়ায় আপত্তিকর ভিডিও তার প্রবাসী স্বামীর পরিবারের সদস্যদের কাছে পাঠায় লিটন। এতে স্বামী ওই নারীকে তালাক দেন। পরবর্তীতে তার কাছে পুনরায় পাঁচ লাখ টাকা দাবি করা হয়। তবে ওই নারী অপারগতা প্রকাশ করেন ও অক্টোবর মাসে চৌদ্দগ্রাম থানায় ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেন।
অভিযোগ পেয়ে পুলিশ লিটনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়। পরে উভয়পক্ষের আইনজীবীদের মাধ্যমে বিষয়টি আপস করার কথা উঠলে ওই গৃহবধূ বিয়ের শর্তে আপসে রাজি হলে উভয়ের বিয়ের বিষয়টির সিদ্ধান্ত আসে আদালত থেকে।
মঙ্গলবার কুমিল্লার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. আতাব উল্লাহ আপসে শর্তে ওই লিটনকে জামিন দেন এবং আদালত আঙিনায় বিয়ের নির্দেশনা দেন। পরে কাজী ডেকে এনে বিয়ের আয়োজন করা হয়। এতে ১০ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করা হয়।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সরকার গিয়াস উদ্দিন মাহমুদ বলেন, বাদীর দাবি অনুযায়ী আসামি তাকে ফাঁদে ফেলে ছবি তুলেছে। সেই ছবি প্রবাসী স্বামীর কাছে পাঠানোর কারণে তাকে ডির্ভোস দিয়েছে। বাদী ও আসামিপক্ষ এলাকায় বিয়ের শর্তে আপস করে এসেছে। আদালত আপসের শর্তে আসামিকে জামিন দিয়েছেন। এছাড়া আদালত আঙিনায় বিয়েরও নির্দেশনা দেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তারেকুল আলম রাসেল বলেন, মূলত বাদী ও আসামির মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। আসামিও জানতেন না বাদী বিবাহিত। এটা মূলত ভুল বুঝাবুঝি। এখন আপসের কারণে আদালত জামিন দিয়েছেন এবং বিয়ের ব্যবস্থা করেছেন।
কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. শাহজাহান আহমেদ জানান, মঙ্গলবারই কারাগারে ওই ব্যক্তির জামিনের কাগজ আসে। কিছু আইনি প্রক্রিয়া শেষে বুধবার তাকে মুক্তি দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।