দ্বীপচরের শিশুদের মাঝে জেলা প্রশাসকের বই বিতরণ

নতুন বছরের আনন্দ ভাগাভাগির জন্য কেক কেটে শিশুদের সঙ্গে সময় কাটান জেলা প্রশাসকব্রহ্মপুত্র আর গঙ্গাধর নদী দিয়ে জেলা শহর তথা বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপচর কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার সীমান্তবর্তী ইউনিয়ন নারায়ণপুর। আধুনিকতার ছোঁয়া যেখানে অনেকটাই অমাবশ্যার চাঁদের মতো। নৌপথে নৌকা কিংবা জলযান ছাড়া সেখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থার বিকল্প এখনও কল্পনাতীত। প্রত্যন্ত ওই অঞ্চলের শিশু শিক্ষার্থীদের মুখে হাসি ফোটাতে নতুন বই নিয়ে সেখানে ছুটে গেলেন কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম। শুক্রবার (১ জানুয়ারি) নারায়ণপুর ইউনিয়নের কুলামোয়া মাঝিয়ালীর চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাঠে চরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেন তিনি।

শুধু নতুন বই নয়, প্রত্যন্ত ওই চরের অবহেলিত শিশুদের মাঝে নতুন বছরের আনন্দ ভাগাভাগির জন্য কেক কেটে শিশুদের সঙ্গে কিছু সময় অতিবাহিত করেন জেলা প্রশাসক। এ সময়  শিশুদের মাঝে খাদ্য ও শীতের পোশাকও বিতরণ করেন তিনি।

জেলা প্রশাসক বলেন, ‘এ বছর বই উৎসব নেই। তবুও প্রত্যন্ত চরের শিশুদের হাতে বছরের প্রথম দিন বই তুলে দেওয়ার উদ্দেশ্যে বিচ্ছিন্ন ওই দ্বীপ চরে যাওয়া। শিশুদের মধ্যে আনন্দ ছড়িয়ে দিতে পেরে অনেক ভালো লেগেছে। জেলা প্রশাসক হিসেবে সরকারে উন্নয়ন পরিকল্পনার বার্তা সবার মাঝে পৌঁছে দেওয়াটাই আমাদের উদ্দেশ্য।’

নদ-নদী দ্বারা জেলা শহর থেকে বিচ্ছিন্ন সীমান্তবর্তী ইউনিয়ন নারায়ণপুরে শিশুদের শিক্ষার প্রসারে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠদানের অনুমতির ব্যবস্থা করার পাশাপাশি সেখানকার মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বিশেষ নজর দেওয়ার আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক। তিনি বলেন, ‘একটি ইউনিয়নের মানুষের মধ্যে এলাকায় পাকা সড়কে হাঁটার আকাঙ্ক্ষা থাকে। ওই ইউনিয়নে পাকা সড়ক নির্মাণসহ এলাকার উন্নয়নে বিশেষ নজর দেওয়া হবে।’

চর নারায়ণপুরে শিশুদের মাঝে বই বিতরণকালে আরও উপস্থিত ছিলেন– অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুজাউদ্দৌলা, নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুর আহমেদ মাসুম ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামান প্রমুখ। পরে ইউনিয়নের শীতার্ত মানুষের মাঝে প্রায় পাঁচ শতাধিক কম্বল বিতরণ করা হয়।

এদিকে সারাদেশের মতো শুক্রবার থেকে কুড়িগ্রামে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন পাঠ্যবই বিতরণ শুরু হয়েছে। সকাল ১০টা থেকে জেলার এক হাজার ৮৩৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ৬ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে ধাপে ধাপে বই বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়।