এক সময় পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন ও পর্যটকবান্ধব শহর হিসেবে পরিচিতি ছিল খাগড়াছড়ি। কিন্তু ব্যাটারি চালিত টমটম, ব্যবসায়ীদের ফুটপাত দখল, প্রশাসনের বেখেয়ালসহ নানা কারণে আজ সেই শহর পরিণত হয়েছে ধুলোবালি আর যানজটের শহরে। শুধু দিনে নয়, রাতেও থাকে যানজট। তবে এ বিষয়ে প্রশাসন বা পৌর কর্তৃপক্ষের মাথা ব্যথা নেই বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৩ হাজার ব্যাটারি চালিত টমটমকে পৌরসভা এলাকার চলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বাস্তবে টমটমের সংখ্যা এর দুই থেকে তিনগুণ বেশি। টমটমের পাশাপাশি জিপ, ট্রাক, সিএনজি, মাহেন্দ্র, টেম্পোসহ বিভিন্ন ধরনের আরও কয়েক হাজার ছোট বড় যানবাহন রয়েছে। জেলা শহরের কোর্ট ভবন এলাকা হতে পৌর বাস টার্মিনাল পর্যন্ত চলছে প্রধান ড্রেনের নির্মাণ কাজ। ফলে যানজট ও ধুলোবালিতে নাকাল সবাই।
ঢাকা থেকে আসা আসমা সিদ্দিকা বলেন, ‘প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য হারাচ্ছে খাগড়াছড়ি। যানজট, গাড়ির ধোয়া, ধুলোবালিতে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। এ যেন ঢাকার মতো অবস্থা।’
খাগড়াছড়ি জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি সুদর্শন দত্ত বলেন, ‘যানজট, ধুলোবালির কারণে জৌলুশ হারাচ্ছে খাগড়াছড়ি। আইনের সঠিক প্রয়োগের জন্য প্রশাসন সোচ্চার হলেও প্রভাবশালী মহলের অসহযোগিতার কারণে সফলতা আসেনি। সবার ভূমিকা থাকলে পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন ও পর্যটকবান্ধব খাগড়াছড়ি গড়ে তোলা সম্ভব।’
খাগড়াছড়ি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি লিয়াকত আলী চৌধুরী বলেন, খাগড়াছড়ি শহরের সব মার্কেট রাস্তার পাশে। রাস্তা যানবাহনের দখলে, রাস্তা সংলগ্ন ড্রেনেজ ঠিকাদার ও তার শ্রমিকদের আর ফুটপাত কিছু প্রভাবশালী ব্যাবসায়ীর দখলে। সম্মিলিত প্রচেষ্টা না থাকায় বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাচ্ছে আমাদের প্রিয় খাগড়াছড়ি। দ্রুত পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
খাগড়াছড়ি পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মাহবুব আলম বলেন, হাজার হাজার ব্যাটারি চালিত টমটম, ব্যাবসায়ীদের ফুটপাত দখল এবং চলমান ড্রেনেজ প্রকল্পের কারণে এ অবস্থা। পরিকল্পিতভাবে ছোট বড় গাড়িগুলো চলাচলের অনুমতি, ফুটপাত দখল মুক্ত করা এবং পৌর কর্তৃপক্ষ সকাল বিকেল পানি দিলে সমস্যা যানজট এবং ধুলোবালির সমস্যা কমতো।
পৌর মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমি দায়িত্ব নিয়েছি। ড্রেনের নির্মাণ কাজ চলায় একটু যানজট হচ্ছে। আর শুষ্ক মৌসুম হওয়ায় ধুলোবালি। সকাল বিকাল রাস্তায় পানি দিয়ে ও সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। পরিকল্পিতভাবে ফুটপাত দখল মুক্ত হবে। খাগড়াছড়ি যে পর্যটক বান্ধব তা আবারও প্রমাণিত হবে।’
জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, খাগড়াছড়িকে সুন্দর ও পর্যটকবান্ধব করতে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।