‘বহুরূপী’ প্রতারক চক্র!

দেশের বিভিন্ন জেলায় ব্যবসায়ীদের টার্গেট করতো তারা। এরপর লাভজনক ব্যবসার প্রলোভন দেখিয়ে, কখনও ঠিকাদারী কাজ পাইয়ে দেওয়া, কখনও ডিলারশিপ পাইয়ে দেওয়া আবার কখনোবা এজেন্ট নিয়োগের কথা বলে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় তাদের ভাড়াকৃত সুসজ্জিত অফিসে ডেকে নিয়ে আসে। পরে জামানত বা বিনিয়োগ বাবদ মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করতো। প্রতিনিয়ত নিত্য নতুন কৌশলে এই সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্যরা তাদের পাতানো ফাঁদে ফেলে ব্যবসায়ীদের নিঃস্ব ও সর্বস্বান্ত করে আসছে। এমন একটি ‘বহুরূপী’ প্রতারক চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব।

নারায়ণগঞ্জের সদর ও ফতুল্লার বিভিন্ন এলাকা থেকে বহুরূপী সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের চার সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১১। তারা হলো- এসহাক আলী (৭০), মো. মামুন (৪৯), খন্দকার রাজু আহমেদ ওরফে মাসুদ (৫৬) ও ফারুক কবির (৩৫)। শনিবার (৮ মে) রাতে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। এ বিষয়ে রবিবার (৯ মে) বিকালে র‌্যাব-১১’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দীন চৌধুরীর পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, প্রতারক চক্রটি কুমিল্লার লাকসাম, লালমাই ও মনোহরগঞ্জ থানা এলাকায় কয়েক শত টিউবওয়েল স্থাপনের ঠিকাদারী কাজ পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ঠিকাদারী কাজের জামানত বাবদ প্রায় ২৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে সু-কৌশলে আত্মগোপন করে। এছাড়াও প্রতারক চক্রটি নিজেদেরকে রিয়েল এস্টেট কোম্পানির মালিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে তাদের নির্মাণাধীন কয়েকটি বহুতল ভবনে প্রায় ২২০টি কাঠের দরজা ও  দরজার ফ্রেম লাগানোর প্রলোভন দিয়ে প্রায় ১১ লাখ ৫৭ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এছাড়া কুমিল্লার ভুট্টার এজেন্ট পাইয়ে দেওয়ার এবং উক্ত কোম্পানির মাসিক ৮০-৯০ লাখ টাকার ভুট্টার অর্ডার পাইয়ে দেওবার কথা বলে প্রায় ১৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে প্রতারক চক্রটি অফিস গুটিয়ে নিয়ে অন্যত্র কেটে পড়ে। এভাবেই তারা প্রতারণা করে আসছিল।

র‌্যাব আরও জানায়, এই প্রতারক চক্রের প্রতারণায় প্রায় শত শত ব্যবসায়ী নিঃস্ব ও সর্বস্বান্ত হয়েছে বলে গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়। গত ১৫ বছর ধরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখকে ফাঁকি তারা এ প্রতারণা করে আসছিল। তারা এর আগে কখনও গ্রেফতার হয়নি। প্রতারক চক্রের সদস্যরা প্রত্যেকেই প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।