হাতিয়ায় ৫ কিশোরকে বেঁধে নির্যাতন: আটক ৫ জন কারাগারে

নোয়াখালীর হাতিয়াতে জাল চুরির অভিযোগে পাঁচ কিশোরকে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় আটক পাঁচ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। সোমবার (১৭ মে) হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল খায়ের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

নির্যাতনের শিকার কিশোররা হলো– উপজেলার চরকিং ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ শুল্লুকিয়া গ্রামের জেলেপাড়ার বাসিন্দা কিরণ জলদাস (১৫), সমূল্য জলদাস (১৫), সহদেব জলদাস (১৫), রতন জলদাস (১৬) ও শিশুপদ জলদাস (১৬)।

গ্রেফতার পাঁচ জন হলো– শুল্লুকিয়া গ্রামের জেলেপাড়ার মাতব্বর শ্রীহরি জলদাস, নেপাল জলদাস, বিধান জলদাস, রায় মোহন জলদাস ও প্রিয়লাল জলদাস। 

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল খায়ের বলেন, ‘এ ঘটনায় গতকাল রবিবার রাতে নির্যাতনের শিকার কিশোর দাসের বাবা হরিপদ দাস বাদী হয়ে ছয় জনকে আসামি করে হাতিয়া থানায় একটি মামলা করেন। এখন পর্যন্ত ওই মামলার পাঁচ আসামিকে আটক করা হয়েছে। তাদের আদালতে পাঠালে বিজ্ঞ বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।’

উল্লেখ্য, গতকাল রবিবার সকালে উপজেলার চরকিং ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ শুল্লুকিয়া গ্রামের জেলেপাড়ার গ্রাম্য সালিশে কিশোর জেলেদের দড়ি দিয়ে বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানোর এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নির্যাতনের এক মিনিট ১১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হলে জেলা পুলিশ প্রশাসনের টনক নড়ে। পরে জেলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে হাতিয়া থানা পুলিশ তাৎক্ষণিক এ ঘটনায় পাঁচ জনকে আটক করে। ভিডিওতে দেখা যায়, স্থানীয় জেলেপাড়ার নারী-পুরুষের সামনে পাঁচ কিশোরকে লাঠিপেটা করা হচ্ছে। এই সময় ওই পাঁচ কিশোর এবং তাদের পরিবারের নারী সদস্যরা আহাজারি করে তাদের ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানায়। কান্নারত নারীরা এগিয়ে আসলে তাদেরও ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে চরকিং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গত কয়েক দিন আগে পাঁচ কিশোর মিলে এক জেলের একটি বিন্দি জাল চুরি করে পার্শ্ববর্তী সোনাদিয়া ইউনিয়নের এক জেলের কাছে বিক্রি করে দেয়। পরে ওই জাল উদ্ধার করে শনিবার (১৪ মে) বিকালে মালিককে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রবিবার সকালে জেলেপাড়ার শ্রীহরি দলদাস, নেপাল জলদাস, প্রিয়লাল জলদাস, বিধান জলদাস ও রায় মোহন জলদাসের নেতৃত্বে একটি সালিশি বৈঠক বসে। বৈঠকের এক পর্যায়ে জেলেপাড়ার পাঁচ মাতবর প্রত্যেককে ১০ বেত করে মারার আদেশ দেন এবং দুই হাজার টাকা করে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। পরে মাতবরদের নির্দেশে পাঁচ কিশোরকে বেঁধে প্রকাশ্যে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটান চৌকিদার আমির হোসেন।’