মা ছেলেকে অপহরণ: জামিন পাননি এএসপিসহ ৩ সিআইডি সদস্য

মা ও ছেলেকে অপহরণ মামলার আসামি রংপুর সিআইডির এএসপি সারোয়ার কবির, এএসআই হাসিনুর রহমান ও কনস্টেবল আহসানুল হকের জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) রাতে দিনাজপুর আদালতের পরিদর্শক মনিরুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

পরিদর্শক মনিরুজ্জামান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকালে দিনাজপুর আমলি আদালত-৪ (চিরিরবন্দর)-এ ওই তিন সিআইডি সদস্যের পক্ষে জামিনের আবেদন করেন অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম। এ সময় দিনাজপুর আদালত পুলিশের এসআই সবুজ আলী জামিনের বিরোধিতা করেন। পরে আদালতের বিচারক শিশির কুমার বসু তাদের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন। এখনও বিচার কাজ শুরু না হওয়ায় পুলিশই এখানে রাষ্ট্রপক্ষ হিসেবে কাজ করছে।’

এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘যে ধারায় মামলা দেওয়া হয়েছে সেটি জামিনযোগ্য অপরাধ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি আলোচিত হওয়ায় আদালত জামিন নামঞ্জুর করেছেন। খুব শিগগিরই আমরা উচ্চ আদালতে যাবো।’

উল্লেখ্য, গত সোমবার (২৩ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে ছয়-সাত ব্যক্তি লুৎফর রহমান নামে একজনের বাড়িতে অভিযান চালান। এ সময় তারা নিজেদের ডিবি পুলিশ ও র‌্যাবের সদস্য পরিচয় দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। তারা বাড়ির আলমারি, শোকেস, ড্রয়ারসহ বিভিন্ন স্থান তছনছ করে। পরে বাড়ির মালিক লুৎফরকে না পেয়ে স্ত্রী জহুরা বেগম ও ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে তুলে নিয়ে যায়। পরে পরিবারের সদস্যরা দিনাজপুর ডিবি কার্যালয়ে খোঁজ করলে ডিবি পুলিশের পক্ষ থেকে কোনও অভিযান চালানো হয়নি বলে জানানো হয়। রাতে অপহরণকারীরা জাহাঙ্গীর আলমের মোবাইল থেকে ভিকটিমদের উদ্ধারের জন্য ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এক পর্যায়ে অপহরণকারীরা ১৫ লাখ টাকা দাবি করে, নয়তো ভিকটিমদের হত্যা করার হুমকি দেয়। পরে পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি চিরিরবন্দর থানা পুলিশকে অবহিত করে এবং সেখানে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরই মধ্যে পরিবারের সদস্যরা অপহরণকারীদের আট লাখ টাকা দিতে চায়। সেই মোতাবেক বাশেরহাট এলাকায় টাকা নিতে এসে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন সিআইডির এএসপি সারোয়ার কবির, এএসআই হাসিনুর রহমান ও কনস্টেবল আহসানুল হক। পরে অপহরণকারী ও ভিকটিমদের দিনাজপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নেওয়া হয়। পুলিশ অভিযান চালিয়ে এই ঘটনার মূল হোতা পলাশকে আটক করে। বিকালে পাঁচ জন আসামিকে দিনাজপুর আমলি আদালত-৪ (চিরিরবন্দর)-এ তোলা হলে বিচারক শিশির কুমার বসু তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এ সময় আসামি পলাশ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এছাড়াও উদ্ধার হওয়া দুই ভিকটিমের জবানবন্দিও নেন আদালত।