শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগে গৃহকর্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা

ময়মনসিংহে তানিয়া আক্তার (৯) নামে এক শিশু গৃহকর্মীকে মারাত্মক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে গৃহকর্ত্রী আসমা আক্তার এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে। নির্যাতনের শিকার শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এই ঘটনায় শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে তানিয়ার বাবা নাজিম উদ্দিন বাদী হয়ে কোতয়ালি মডেল থানায় অভিযুক্ত গৃহকর্ত্রী, তার ছোট বোন লিটু ও ভাই সোহাগকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।

মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন কোতয়ালি মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দ। তিনি জানান, আসমা ময়মনসিংহ মেডিক্যালের পরমাণু চিকিৎসা কেন্দ্রের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। গত তিন মাস আগে তার গ্রামের বাড়ি ফুলবাড়িয়ার কুশমাইল এলাকার পানেরভিটা গ্রাম থেকে তানিয়াকে কাজের জন্য মহানগরীর চরপাড়ার ভাড়া বাসায় নিয়ে আসেন। তানিয়া ওই গ্রামের কৃষিশ্রমিক নাজিম উদ্দিনের মেয়ে। কাজে আনার পর থেকে তাকে নানা কারণে নির্যাতন শুরু করেন আসমা ও তার পরিবারের সদস্যরা। পান থেকে চুন খসলেই তানিয়ার ওপর নির্যাতন চলতো। এক পর্যায়ে তার যৌনাঙ্গে ব্লেড দিয়ে আঘাত করে তারা। গত ৯ সেপ্টেম্বর তানিয়া অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে গ্রামের বাড়ির পাশে ফেলে রেখে আসে ওই পরিবারের সদস্যরা। স্থানীয়রা টের পেয়ে তাকে উদ্ধার করে ফুলবাড়িয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এই খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে অভিযুক্ত আসমা ও তার পরিবারের লোকজন বাসায় তালা দিয়ে পালিয়ে যায়। তাদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান চলছে।  

এদিকে তানিয়ার বাবা নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘অভাবের তাড়নায় ছোট্ট মেয়েকে কাজে দিয়েছিলাম। তারা এভাবে আমার মেয়ের ওপর নির্যাতন করবে সেটা বুঝতে পারিনি।’ তিনি মেয়ের নির্যাতনের বিচার দাবি করেছেন।

তানিয়ার নির্যাতনের খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী আসমা ও পরিবারের সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছেন।

জেলা মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট খালেকুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘শিশুদের দিয়ে কাজ করানো মানবাধিকারের লঙ্ঘন। তার ওপর পাশবিক নির্যাতন, এটা মেনে নেওয়া যায় না।’ নির্যাতনকারীদের বিচার দাবি করেছেন তিনি।