শিশু গৃহ পরিচারিকাকে ৩ বছর ধরে নির্যাতন, গৃহকর্ত্রী আটক

তিন বছর ধরে গৃহকর্ত্রীর হাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছিল শিশু লিপি খাতুন (১১)। জোর করে তাকে দিয়ে করানো হতো বড় মানুষের কাজ। পান থেকে চুন খসলেই শুরু হতো অমানুষিক নির্যাতন। শেষে স্থানীয়দের খবরে তাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (২৭ মে) বিকালে সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার সয়াধানগড়া মধ্যপাড়া মহল্লার ব্যাংকার আলী আজহারের বাসা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় আলী আজহারের পুত্রবধূ অভিযুক্ত নির্যাতনকারী যুথী খাতুনকে আটক করে পুলিশ। যুথির স্বামীর নাম তারেক গোলাম। যুথীকে শনিবার (২৮ মে) আদালতে পাঠানো হয়েছে।

লিপি কুড়িগ্রাম জেলার কচাকাটা উপজেলার পূর্বকেদার গ্রামের বাচ্চু মিয়ার সন্তান।

স্থানীয়রা জানান, আজহারের বাড়িতে তিন বছর ধরে কাজ করতো লিপি। তার পর থেকেই গৃহকর্ত্রী যুথী তার ওপর নির্যাতন করতো। শুক্রবার দুপুরে স্থানীয়রা বিষয়টি পুলিশকে জানান। খবর পেয়ে আহত অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

লিপি জানায়, তাকে বিভিন্ন সময়ে লাঠি, তরকারির চামচ দিয়ে মারা হতো এবং গরম ইস্ত্রি দিয়ে ছ্যাঁকা দেওয়া হতো। এ ছাড়া চড়-থাপ্পড় আর কিল-ঘুষি মারা হতো সব সময়ই। কাউকে কিছু বললে হুমকি দেওয়া হতো।

পাশের বাড়িতেই কাজ করেন শিশুটির বড় বোন মোহসিনা সুমি। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘কয়েকদিন আগে আমার বোনকে টয়লেটে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। আমি পাশের বাড়িতে কাজ করলেও আমার সঙ্গে দেখা করতে দিতো না। আজ এলাকাবাসীর মুখে শুনে আমি এসেছি।’

সিরাজগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) সুমন কুমার দাস জানান, এলাকাবাসীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নির্যাতনের শিকার শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তার শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

তিনি আরও জানান, পরে শিশুটির পরিবার থানায় অভিযোগ করলে গৃহকর্ত্রী যুথী খাতুনকে আটক করা হয়। সকালে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং শিশুটিকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।