ফেনীতে ৩ ভাইয়ের মৃত্যুর ১৩ দিন পর মামলা

ফেনীতে সেপটিক ট্যাংক বিস্ফোরণে তিন ভাইয়ের মৃত্যুর ঘটনার তেরো দিন পর আদালতে মামলা করেছে বাংলাদেশ মানবাধিকার সম্মিলন-বামাস। রবিবার দুপুরে ফেনী সদর আমলি আদালতে এ মামলা দায়ের করেন বামাসের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম নান্টু। আদালত দীর্ঘ শুনানি শেষে আদেশের জন্য মামলাটি অপেক্ষমাণ রেখেছেন।

অভিযোগকারী বামাসের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সেফটিক ট্যাংক বিস্ফোরণে তিন ভাইয়ের মৃত্যুর ঘটনায় ভবন মালিক রফাদফা করে পার পেয়ে যাচ্ছেন। গত ২৯ জুলাই দুটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদ দৃষ্টিগোচর হলে আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিই। বিল্ডিং কোড ও পৌরসভার শর্ত অমান্য করায় দণ্ডবিধি অনুযায়ী এটি একটি হত্যাকাণ্ড। তাই এর বিচার চেয়ে এবং ভবনমালিক রুহুল আমিন এবং তার ছেলে নাজমুস শাহাদাত সোহাগকে আইনের আওতায় আনতে সংগঠনের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। আশা করি, আদালতে ন্যায়বিচার পাবেন নিহতদের পরিবার।’

উল্লেখ্য, ফেনী শহরের নাজির রোডের বাসিন্দা রুহুল আমিনের নির্মাণাধীন একটি ভবনের নিচতলায় ভাড়া থাকতেন বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের ফুলহাতা গ্রামের সৈয়দ আলী মুন্সির ছেলে নুরুল ইসলাম মুন্সী (৫২), আবদুর রহমান মুন্সী (৪৯) ও মুনীরুজ্জামান মুন্সী(৪২)। তারা ফেনীতে দিনমজুর হিসেবে কাজ করতেন। গত ২৬ জুলাই সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ভবনের নিচতলায় একটি সেফটিক ট্যাংকে বিস্ফোরণ হয়। এতে তিন ভাইয়ের শরীর ক্ষত-বিক্ষত হয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। ২৮ জুলাই সকাল ১১টায় বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার পঞ্চকরণ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে পারিবারিক কবরস্থানে মৃত তিন ভাইকে দাফন করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, বাড়ির সেপটিক ট্যাংকের ওপরে একটি কক্ষে থাকতেন ওই শ্রমিকরা। ওই ট্যাংকের গ্যাস সঞ্চালনের কোনও সুযোগ না রাখায় দীর্ঘদিন ধরে গ্যাস জমাট হয়। ওই দিন হঠাৎ বিকট শব্দে ট্যাংকটি বিস্ফোরিত হয়। এতে ভবনের নিচতলাসহ ওপরের ছাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘটনাস্থলে তিন ভাইয়ের মৃত্যু হয়।

ফেনী ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা পূর্ণচন্দ্র মুৎসুদ্দি বলেন, ‘নির্মাণাধীন ভবনটিতে সেপটিক ট্যাংকের গ্যাস অপসারিত হওয়ার কোনও ব্যবস্থা ছিল না, ফলে এই দুর্ঘটনা ঘটে।’

আরও খবর: সেপটিক ট্যাংক বিস্ফোরণে ৩ ভাইয়ের মৃত্যু