‘মানসিক চাপে’ ছিলেন কলেজ শিক্ষিকা, মামুনকে দোষারোপ স্বজনদের

নাটোর শহরের বলারীপাড়ায় বাড়া বাসা থেকে কলেজ শিক্ষিকা খায়রুন নাহার মরদেহ উদ্ধার করা হয় রবিবার সকালে। এরপর ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন তার আত্মীয়-স্বজনরা। তবে দুপুর পর্যন্ত তার স্বামী মামুনের পক্ষের কাউকে দেখা যায়নি। এই মৃত্যুর বিষয়ে শিক্ষিকার স্বজনরা মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন। 

আরও খবর: কলেজছাত্রকে বিয়ে করা সেই শিক্ষিকার লাশ উদ্ধার

শিক্ষিকা-ছাত্র দম্পতির বিয়ে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর হলেও এ সংবাদ সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয় চলতি বছরের ৩১ জুলাই। ওই ঘটনা ভাইরালের মাত্র ১৪ দিন পরই উদ্ধার হলো ওই শিক্ষিকার মরদেহ। এ ঘটনায় খাইরুন নাহারের স্বামী মামুনকে আটক করেছে পুলিশ। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন।

মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে শিক্ষিকার ভাগ্নে নাহিদ হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, মামুন মাদকাসক্ত। বিয়ের পর থেকে এ পর্যন্ত তিনি পাঁচ লাখ টাকা এবং একটি মোটরসাইকেল নিয়েছেন। সম্প্রতি আরও দামি মোটরসাইকেল চেয়েছেন মামুন। এ নিয়ে তার খালা খায়রুন নাহার মানসিক চাপে ছিলেন। এ ছাড়া সম্প্রতি গুরুদাসপুরে মাদক নিয়ে কিছু বখাটের মধ্যে গোলমাল হয়। ওই ঘটনায় মামুন আসামি হয়েছেন। এসব বিষয় নিয়ে মানসিক ও পারিবারিক বিভিন্ন চাপে অশান্তিতে ছিলেন তার খালা। এই মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

আরও খবর: ‘রাত ১১টায় বাসায় এসে ২টায় বেরিয়ে যান মামুন’

শিক্ষিকার চাচাতো ভাই সাবের হোসেনের দাবি, বিয়ের ঘটনা ভাইরাল হওয়ার পর থেকে খায়রুন নাহারের আত্মীয়, সহকর্মী, পরিচিতজনরা বিভিন্ন সমালোচনা করেছেন। কেউ এটাকে পজিটিভ আবার কেউ নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। এ নিয়ে চাপে ছিলেন খাইরুন। তবে কী কারণে তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন তা তার বোধগম্য নয়। বিষয়টি তদন্তের মাধ্যমে পরিষ্কার করার আহ্বান জানান তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, খাইরুনের আগের স্বামী বা সন্তানের পক্ষ থেকে কোনও চাপের বিষয় তারা শোনেননি।

ওই শিক্ষিকার বাবার বাড়ি গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড়ের স্থানীয় কাউন্সিলর শেখ সবুজ জানান, মেয়ের পরিবার অত্যন্ত ভালো। তবে ওই ছেলে মাদকাসক্ত বলে শোনা গেছে। এই মৃত্যুর রহস্য দ্রুত উন্মোচনের দাবি করেন তিনি।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসা নাটোর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার শরীফ উদ্দীন জানান, জেলা পুলিশ ঘটনার রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করছে। আর পিবিআই পুলিশ ওই ঘটনার ছায়া তদন্ত করছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঘটনার রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করছে জেলা পুলিশ।

এ মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে পুলিশ জানিয়েছে, মামুনের মাদকের মামলায় আসামি হওয়া, বখাটেদের সঙ্গে মারামারি, নতুন মোটরসাইকেল চাওয়া, স্বজন ও প্রতিবেশীদের কটু কথা, সংসার চালানোয় টানাপোড়েন-- এসব কারণে মানসিক চাপে ছিলেন শিক্ষিকা।