‘ঘুষিতে’ ভাইয়ের মৃত্যুর খবরে বোনেরও মৃত্যু, আটক ৬

কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নে গাছের ডাল কাটাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিবাদে আবুল কালাম আজাদ (৭৫) নামে এক ব্যক্তি এবং তার বোন ছকিনা খাতুনের (৭২) মৃত্যুর ঘটনায় এক নারীসহ একই পরিবারের ছয় জনকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার (২৬ অক্টোবর) রাতে ওই ইউনিয়নের রায়পুর গ্রাম থেকে তাদের আটক করে পুলিশে দেন এলাকাবাসী। কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মো. শাহরিয়ার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আটক ব্যক্তিরা হলেন– অভিযুক্ত কাঠ ব্যবসায়ী দুলাল হোসেনের ভাই ইকবাল, নুর জামাল ও নুর বকশ এবং ইকবালের স্ত্রী আলেয়া খাতুন, দুই ছেলে মিজানুর ও আশরাফুল। তারা সবাই অভিযুক্ত জুবায়ের এবং তার বাবা দুলালের সঙ্গে নিহত আবুল কালাম আজাদের বাড়িতে হামলায় অংশ নিয়েছিলেন বলে এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে। তবে মূল অভিযুক্ত দুলাল হোসেন এবং তার ছেলে জুবায়ের এখনও পলাতক রয়েছেন।

এর আগে বুধবার রাত ৯টার দিকে সদরের কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামে আমগাছের ডাল কাটাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিবাদে জুবায়ের নামে এক যুবকের ‘কিল-ঘুষিতে’ আবুল কালাম আজাদ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আজাদের মৃত্যুর খবর শুনে তার বোন ছকিনা খাতুন অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকেও মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের পাশাপাশি ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ঘটনার পর জুবায়ের এবং তার বাবা দুলাল হোসেন পালিয়ে গেলেও তাদের সঙ্গে হামলায় অংশ নেওয়ার অভিযোগে আটক ব্যক্তিদের পুলিশে সোপর্দ করেন এলাকাবাসী। নিরাপত্তা বিবেচনায় পুলিশ ছয় জনকে আটক করে থানায় নেয়। তবে বৃহস্পতিবার সকালে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি।

সদর থানার ওসি শাহরিয়ার বলেন, ‘এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সার্বিক নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় কয়েকজনকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে। নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কোনও লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে সে অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এদিকে নিহতদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আবুল কালাম আজাদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। আর ছকিনার মরদেহ পারিবারিকভাবে দাফনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দাফন শেষে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হবে।