যৌতুকের মামলায় পুলিশ সদস্য কারাগারে

স্ত্রীর করা যৌতুকের মামলায় কুড়িগ্রামে এক পুলিশ সদস্যকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকালে কুড়িগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আমলি আদালত রৌমারীর বিচারক এ আদেশ দেন। পরে পুলিশ নিজ বাহিনীর ওই সদস্যকে কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে পাঠায়।

বাদীর আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারের জেলার আবু সায়েম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের নাম মো. নুর আলম (৩০)। তিনি কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার দক্ষিণ টাপুরচর গ্রামের বাসিন্দা এবং রাজধানীর মিল ব্যারাকে ঢাকা জেলা পুলিশ লাইনসে নায়েক পদে কর্মরত ছিলেন। যৌতুক ও নারী নির্যাতনে অভিযুক্ত এই পুলিশ সদস্য গত ৩০ আগস্ট সাময়িক বরখাস্ত হন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, নুর আলম ২০১৪ সালে রৌমারী উপজেলার নিজ গ্রামে বিয়ে করেন। বিয়েতে চার লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য ছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তিনি চার লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। তার স্ত্রী এতে সম্মত না হওয়ায় তিনি বিভিন্ন সময় তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকেন। এর মধ্যে তাদের একটি মেয়ে সন্তান জন্ম নেয়। কিন্তু তারপরও নির্যাতন বন্ধ হয়নি।

বাদীর আইনজীবী জানান, নুর আলম গত এপ্রিল মাসে কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফিরে যৌতুকের দাবিতে আবারও স্ত্রীকে নির্যাতন করেন। ওইদিন সন্তানসহ তার স্ত্রীকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। পরে তার স্ত্রী বাধ্য হয়ে আদালতের স্মরণাপন্ন হন। আদালত অপরাধ আমলে নিয়ে আসামির প্রতি সমন জারি করেন। পরে আসামি আদালতে হাজির হয়ে আপসের শর্তে জামিন নেন। কিন্তু পরপর দুটি ধার্য তারিখ অতিক্রম করলেও আসামি শর্ত মোতাবেক আপস না করে টালবাহানা করতে থাকেন। গত ১০ সেপ্টেম্বর ধার্য তারিখে আসামি আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মামলার বাদী ও নুর আলমের স্ত্রী বলেন, ‘আমি সংসার করতে ইচ্ছুক। কিন্তু তিনি (নুর আলম) যৌতুক দাবি করে আমাকে দিনের পর দিন নির্যাতন করেন। এমনকি সন্তান ও আমার ভরণপোষণও দেন না। আমি বাধ্য হয়ে আদালতে গেছি। আমি ন্যায়বিচার চাই।’

নির্যাতনের শিকার এই নারী আরও বলেন, ‘নুর আলম আমার বাবার বাড়িতে লজিং ছিলেন। পারিবারিকভাবে আমাদের বিয়ে হয়। আমার বাবা তার পড়াশোনা ও ভরণপোষণের খরচ দিয়ে চাকরি নিয়ে দিয়েছেন। এখন সব ভুলে সে আমাকে নির্যাতন করে, সংসার করতে অস্বীকৃতি জানায়।’