ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাইয়ের পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচার করেই দেশে নির্বাচন করতে হবে। বিচারের আগে কোনও নির্বাচন দেশের জনগণ মেনে নেবে না।’ তিনি শুক্রবার বিকালে বগুড়া শহরের সাতমাথায় মুক্তমঞ্চে এক গণসমাবেশে এসব কথা বলেন।
সমাবেশে সংস্কার ও নির্বাচন প্রসঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির বলেন, ‘সংস্কার ও নির্বাচন উভয়ই জরুরি। তবে নির্বাচন যখনই হোক না কেন, তার আগে সংস্কার অতীব জরুরি।’
আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘গত জুলাই-আগস্টসহ বিগত পনের বছরে আওয়ামী লীগের অপরাধের ব্যাপকতা ও মাত্রা এত বেশি যে, আওয়ামী লীগকে আর রাজনৈতিক দল বলা যায় না। এটি বরং ভয়ংকর অপরাধীদের একটি অপরাধচক্র। তাই তাদের রাজনীতি করতে দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। তাদের রাজনীতি করতে দেওয়ার মানে একটি ভয়ংকর অপরাধীচক্রকে আবারও নির্মমতা চালানোর সুযোগ করে দেওয়া।’
নারী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব প্রসঙ্গে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, ‘নারী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব কুরআন-হাদিস ও এ দেশের মানুষের হাজার বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক।
‘নারী কমিশনের প্রস্তাবনায় যৌনকর্মে নিষ্পেষিত নারীদের রক্ষার বদলে তার ওপরে চলা নির্মমতাকে শ্রম আখ্যা দিয়ে নারীকে এক বীভৎস চক্রে আটকে ফেলার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। নারীর সঙ্গে এই ধরনের নির্মমতার প্রস্তাব যে কমিশন করে, তাদের কমিশন বাতিল করতেই হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মিয়ানমারকে মানবিক করিডোরের প্রস্তাব প্রকৃতপক্ষে রাখাইন ও পার্বত্য অঞ্চলকে একটি খ্রিস্টান রাষ্ট্র বানানোর সাম্রাজ্যবাদীদের পাঁয়তারা। অথচ ১৩ লাখ রোহিঙ্গা মুসলমানকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য জাতিসংঘ কোনও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
‘ফিলিস্তিনে ইসরাইল যে মানব ইতিহাসের জঘন্যতম বর্বরতা চালাচ্ছে। জাতিসংঘ এ নিয়ে কাগুজে বিবৃতি ছাড়া ইসরাইলকে বিরত রাখার জন্য কোনও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। মোদি সরকার ভারতে মুসলমান, মাদ্রাসা এবং মসজিদের ওপর যে চরম নির্যাতন ও ধ্বংসলীলা চালাচ্ছে বিশ্ব সম্প্রদায় এ বিষয়ে নীরবতা পালন করছে।’
মাওলানা আ ন ম মামুনুর রশীদের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন– বিশেষ অতিথি ও দলের নায়েবে আমির আল্লামা আব্দুল হক আজাদ, সংগঠনের রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মুহাম্মাদ নূরুন নাবী, বগুড়া জেলার প্রধান উপদেষ্টা মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, জেলা সহ-সভাপতি প্রভাষক মীর মাহমুদুর রহমান চুন্নু, জেলা সেক্রেটারি সহকারী অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম শফিক, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সভাপতি মাওলানা আব্দুল মতিন, জাতীয় শিক্ষক ফোরামের সভাপতি মাওলানা আলতাব আলী, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের সভাপতি মুহা. ফরহাদ হোসেন মন্টু, ইসলামী যুব আন্দোলনের সভাপতি মুহা. সোহরাব হোসেন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মুহা. সোহেল রানাসহ অনেকে।