অতিরিক্ত সচিবের নির্দেশে কৃষকের ধান নিলো খাদ্য গুদাম

Bamna-Pic-11খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের নির্দেশের পর কৃষকের ধান মজুদ রাখতে বাধ্য হয়েছে গুদাম কর্তৃপক্ষ। বরগুনার বামনা উপজেলায় বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) এই ঘটনা ঘটেছে।

এই বিষয়ে গুদাম কর্মকর্তা মহিমা আক্তার বলেন, ‘খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ওমর ফারুক স্যারের নির্দেশের পর ওই কৃষকের ধান মজুদ রাখা হয়েছে।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. এনামুল ইসলাম বলেন, ‘আমি বর্তমানে খুলনাতে অবস্থান করছি। ওই কৃষকের ধান গুদাম কর্মকর্তার দায়িত্বে মজুদ রাখতে বলেছি। রবিবার এসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’   

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বামনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ডৌয়াতলা ইউনিয়নের কৃষিকার্ডধারী ও ধান বিক্রির জন্য নির্বাচিত কৃষক শাহজাহান অভিযোগ করেন, সকাল ১১টায় তিনি ৪৮ মণ ধান নিয়ে বামনা খাদ্য গুদামে আসেন। দুপুরের দিকে বামনা উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তরিকুজ্জামান সোহাগসহ কয়েকজন যুবলীগকর্মী ধান বিক্রিতে বাধা দেন। এ ঘটনা দেখে আরও কয়েকজন কৃষক ধান বিক্রি করতে না পেরে চলে যান। অন্যদিকে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাজেন্দ্র নাথ শীল খাদ্য গুদামে গিয়ে কোনও ধান পরীক্ষা না করে জানান, এই ধান আমন নয়, সবাই ধান নিয়ে বাড়িতে চলে যান। এ ঘটনায় বুকাবুনিয়া থেকে আসা কয়েকজন কৃষক ধান বিক্রি না করে চলে যান। প্রতিবাদ হিসেবে ধান নিয়ে তিনি সন্ধ্যা পর্যন্ত খাদ্য গুদামে অপেক্ষা করেন। সন্ধ্যায় গুদাম কর্মকর্তা তাকে জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারত সফরে রয়েছেন) ও কৃষি কর্মকর্তা (ছুটিতে) বামনাতে না থাকার কারণে আজ  কোনও ধান কেনা হবে না।

অভিযোগের বিষয়ে বামনা উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তরিকুজ্জামান সোহাগ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এলাকার কয়েকজন কৃষক আমাকে জানান, আমন ধানের নামে ইরি ধান খাদ্য গুদামে জমা দিচ্ছেন ওই কৃষক। তাই আমি গিয়েছিলাম। তবে, আমি কাউকে বাধা দেইনি।’

আপনি তো কৃষি কর্মকর্তা নন, তাহলে কেন সেখানে গেলেন এমন প্রশ্নে তরিকুজ্জামান সোহাগ বলেন, ‘এলাকার কয়েকজন জানিয়েছে, সেজন্য গিয়েছি।’

অভিযোগের বিষয়ে সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাজেন্দ্রনাথ শীল বলেন, ‘কৃষি কর্মকর্তার প্রতিনিধি হিসেবে আমি গুদামে যাই। ধান আমাদের এলাকার নয়, এটি মনে হওয়ার কারণে আমি ধান কিনতে খাদ্য গুদাম কর্মকর্তাকে নিষেধ করি।’ 

বামনা খাদ্য গুদামের শ্রমিক আবদুস সালাম বলেন, ‘কৃষি কর্মকর্তার প্রতিনিধি রাজেন্দ্রনাথ শীল কোনও ধানের বস্তা না দেখেই গেটে বসেই বলেন, এই ধান বামনার নয়। এটি কেনা হবে না।’

এ ব্যাপারে খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা মহিমা আক্তার বলেন, ‘কৃষকেরা আজ যে ধান গুদামে বিক্রি করতে নিয়ে এসেছে তা মানসম্মত। এই ধান কেনার উপযোগী। তবে কর্মকর্তারা না থাকার কারণে আজ ধান কেনা সম্ভব নয়।’

পরে ওই কৃষক খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ওমর ফারুকে অবহিত করেন। তার নির্দেশে অবশেষে ধান মজুদ রাখতে বাধ্য হয় গুদাম কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুন:

খাদ্য গুদাম কর্মকর্তার কারাদণ্ড