টানা বর্ষণে ঘের ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা

বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে ধানক্ষেতবঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে উপকূলীয় এলাকায় গত দু’দিন ধরে ঝড়ো বৃষ্টি হচ্ছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। টানা বর্ষণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মাছের ঘের, মৌসুমী কৃষক ও আমন চাষিরা। 

দুই দিনের টানা বর্ষণে বরগুনা পৌরসভাসহ আশপাশের এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া লোকজন। দু’দিনের টানা বর্ষণে সদর উপজেলা বরইতলা, পোটকাখালী বা ওয়ালকার খেজুরতলা ব পৌর শহরের কলেজ ব্রাঞ্চ, ডিকেপি রোড, কেজি স্কুল সড়ক এলাকার বিভিন্ন এলাকা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। তালতলী উপজেলার মালিপাড়া, নয়াপাড়া কাজির খাল, জয়ালভাঙা, ফকিরহাটসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত। জমির ধান বাতাসে হেলে পড়েছে এবং মাছের ঘের তলিয়ে গেছে।

আমতলী, তালতলী, পাথরঘাটা, বামনা, বেতাগী উপজেলায় ভারী বর্ষণের কারণে প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া পায়রা-বলেশ্বর ও বিষখালি প্রধান তিনটি নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিম্নচাপ ও ভারী বর্ষণের ফলে নদীর পানি তিন ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে উপকূলের নিমাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। 

বৃষ্টিতে বিপাকে শ্রমজীবীরা

বরগুনা সদর উপজেলা খাজুরতলা গ্রামের কৃষক রাসেল মিয়া বলেন,  অল্প কিছু জমিতে শীতকালের ফসল চাষ করেছিলাম।  কিন্তু দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে তার সব শেষ হয়ে গেছে আবার পুনরায় ক্ষেত করতে হবে।

তালতলী উপজেলার মালিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা শাহাদাত হোসেন বলেন,  পুকুরে মাছ ছেড়েছিলাম,  বিক্রির উপযোগী হয়ে গেছিল। টানা বৃষ্টিতে আমার সব শেষ হয়ে গেল। এই পুকুর থেকে প্রতিবছর এ আমার এক লাখ টাকার ওপরে আসতো।

একই গ্রামের কৃষক শাহজালাল বলেন, ধান উড়তে বেশি সময় লাগবে না। কিন্তু টানা এই বৃষ্টিতে সব শেষ হয়ে যাবে। এখন এই বীজ থেকে ফসল আশা করা যায় না। দমকা হাওয়ায় ক্ষেতের ধান শুয়ে পড়েছে।

বৃষ্টিতে বিপাকে শ্রমজীবীরা

বরগুনার জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, টানা বর্ষণে যেসব এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদেরকে পুনর্বাসনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। কৃষি বিভাগ ও মৎস্য বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও মাছ চাষিদের সহায়তা করা হবে।

তিনি আরও বলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টি হচ্ছে। এটি ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিলে তা মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।