‘ইউক্রেনে জাহাজে থাকা ২৮ বাংলাদেশির খোঁজখবর নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী’

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন বলেছেন, ‘ইউক্রেনে জাহাজে থাকা ২৮ বাংলাদেশির খোঁজখবর নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতোমধ্যে নৌপরিবহনমন্ত্রীকে এ বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। হাদিসুর রহমান আরিফের লাশ এবং সেখানে আটকে পড়াদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে সরকার। আমরা আশাবাদী, আরিফের লাশ চলে আসবে। সেখানে যারা আটকে পড়েছেন তাদেরও নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে আনা হবে।’

বৃহস্পতিবার (০৩ মার্চ) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ইউক্রেনে নিহত বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের হাদিসুর রহমান আরিফের বাড়িতে আসেন আফজাল হোসেন। এ সময় তিনি আরিফের শোকাহত মা-বাবাকে সান্ত্বনা এবং লাশ ফিরিয়ে আনার আশ্বাস দেন। 

আফজাল হোসেন বলেন, বাংলাদেশ একটি শান্তিপ্রিয় দেশ। আমরা চাই না কোনোভাবেই আমাদের দেশের কোনও নাগরিক ক্ষতিগ্রস্ত হোক। প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় খুব শিগগিরই তাদের ফিরিয়ে আনবে সরকার। 

আরও পড়ুন: ইউক্রেনে জাহাজে থাকা ২৮ বাংলাদেশির পরিচয় মিলেছে

এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সরোয়ার টুকু, বরগুনা-২ আসনের এমপি শওকত হাচানুর রহমান রিমন, বরগুনা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির, বেতাগী উপজেলা চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান ফোরকান ও পৌর মেয়র এবিএম গোলাম কবির প্রমুখ। 

নিহত হাদিসুর রহমান আরিফ

চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনে আটকে পড়া বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজ এমভি বাংলার সমৃদ্ধিতে রকেট হামলায় প্রকৌশলী হাদিসুর রহমান আরিফ নিহত হন। বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ওই জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দায়িত্বপালন করছিলেন তিনি। বাংলাদেশ সময় বুধবার রাত ৯টা ২৫ মিনিট ও ইউক্রেন সময় ৫টা ২৫ মিনিটে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় জাহাজের ওপরে ছিলেন আরিফ। তার সঙ্গে ছিলেন আরও ২৮ নাবিক ও ক্রু।

আরও পড়ুন: ইউক্রেনে আটকে পড়া জাহাজ থেকে বাংলাদেশিদের বাঁচার আকুতি

বিএসসি কার্যালয় সূত্র জানায়, জাহাজটি ইউক্রেনের বন্দর থেকে পণ্য ভর্তি করে ইতালির বন্দরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ায় ওই বন্দর থেকে পণ্য লোডিং বাতিল করা হয়। এ কারণে জাহাজটি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে নোঙর করে রাখা হয়। জাহাজটিতে অন্তত ২৫ দিনের রসদ মজুত আছে। তুরস্কের এরেগলি বন্দর থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি খালি জাহাজটি অলভিয়া বন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ২২ ফেব্রুয়ারি এমভি বাংলার সমৃদ্ধি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে পৌঁছে। এরই মধ্যে ঘটে দুর্ঘটনা।

জাহাজের বাকি ২৮ জন নাবিক ও ক্রু অক্ষত আছেন। তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ চলছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) নির্বাহী পরিচালক পীযূষ দত্ত।

আরও পড়ুন: আরিফের লাশ ফেরত আনার দাবি স্বজনদের 

তিনি বলেন, ‌‘জাহাজে থাকা নাবিক ও ক্রুদের উপকূলে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। তাদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার আগে বন্দরের তীর থেকে কাউকে সেফটি ও সিকিউরিটি নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য ক্লিয়ারেন্স পেতে হবে। ক্লিয়ারেন্স পেলে আমরা তাদের যেতে অনুমতি দেবো।’