তালাক দেওয়ায় সাবেক স্বামীর ১৪টি গরু-ছাগল চুরি

বরিশাল নগরীর ঠাকুরবাড়ির পোল এলাকার গরুর খামার থেকে চুরি যাওয়া আট লাখ টাকা মূল্যের তিন অস্ট্রেলিয়ান গাভি, একটি বাছুর ও ১০টি ছাগল উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় এর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে আটক করা হয়। শুক্রবার (৭ এপ্রিল) বিকালে বরিশাল নগরীর নবগ্রাম রোডের রুইয়ার পোল এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় এসব গরু ও ছাগল।

জানা গেছে, এই প্রাণীগুলো নগরীর লাতু চৌধুরী সড়কের বাসিন্দা গরুর খামারি আমিনুল ইসলাম শামীমের। তিনি ওই এলাকার মৃত নুরুল হক সিকদারের ছেলে। অভিযুক্ত হলেন তার সাবেক স্ত্রী শামসুন্নাহার তৃপ্তি। তিনি বাকেরগঞ্জ এলাকার আব্দুর রহিম সিকদারের মেয়ে। স্বামী তালাক দেওয়ায় গরু ও ছাগলগুলো চুরি করেছে সাবেক স্ত্রীর স্বজনরা।

অভিযোগ উঠেছে, গরু ও ছাগলের বিক্রি করা টাকা দিয়ে তালাক দেওয়া স্বামীসহ তার পরিবারের সদস্যের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেন। এরপর ওই টাকায় মামলা পরিচালনা করে আসছেন তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর বাবা।

২০০৮ সালে পারিবারিকভাবে শামীমের সঙ্গে তৃপ্তির বিয়ে হয়। ২০২২ সালে শামীম তালাক দেন। কিন্তু ওই তালাক আইনসিদ্ধ হয়নি দাবি করে তারা একের পর এক মামলা দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

আমিনুল ইসলাম শামীমের দাবি, তাদের সংসারের বয়স ১৪ বছর। দুইটি সন্তান রয়েছে। কিন্তু তৃপ্তির জন্য পরিবারে দ্বন্দ্ব লেগেই থাকতো। দ্বন্দ্ব ঠিক না করতে পেরে তালাক দেন। এরপর স্ত্রীর পরিবার একের পর এক মামলা দেওয়া শুরু করে।

আরও দাবি করেন, মামলা পরিচালনার জন্য ৩ এপ্রিল তার খামার থেকে আট লাখ টাকা মূল্যের তিনটি অস্ট্রেলিয়ান গাভি ও ১০টি ছাগল চুরি করে নেন সাবেক স্ত্রীর স্বজনরা। এর মধ্যে একটি গাভির বাচ্চা দেওয়ার সময় হয়ে এসেছিল। পরে ওই গরু ও ছাগল তারা বিক্রি করে দেয়। এই বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ নগরীর রুইয়ার পোল এলাকা থেকে ওই গরু ও ছাগল উদ্ধার এবং এর সঙ্গে জড়িত দুজনকে আটক করা হয়।

নগরীর রুইয়ার পোল এলাকার বাসিন্দা সৈইজ উদ্দিন হাওলাদার জানান, চার লাখ ৩০ হাজার টাকায় কসাইদের কাছ থেকে তিনটি গাভি ও একটি বাচ্চা কিনেছেন। এর মধ্যে একটি গাভি বাচ্চা দিয়েছে। কিন্তু তা যে চোরাই তা জানতেন না। কেনার আগে বিভিন্ন স্থানে জিজ্ঞাসাও করেছেন, কেউ সঠিক তথ্য দিতে পারেনি। আজ পুলিশ এসে নিশ্চিত করেছে, ওই গরু ও ছাগল চোরাই করা। এরপর ওই গরু ও ছাগল তার জিম্মায় দিয়েছে পুলিশ। এখন কষ্টের টাকার কী হবে সে বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত দেয়নি পুলিশ। তবে যার কাছ থেকে কিনেছেন, তার নাম ও ঠিকানা পুলিশের কাছে দিয়েছেন।

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আনোয়ার হোসেন ১৪টি গরু ও ছাগল উদ্ধারের বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, এ ঘটনায় দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। তাদের সম্পৃক্ততা পেলে গ্রেফতার দেখানো হবে। উদ্ধার করা গরু ও ছাগল নগরীর রুইয়ার পোল এলাকার সৈইজ উদ্দিনের জিম্মায় রাখা হয়েছে। গরুর চুরির পর তিন হাত বদল হয়েছে। সবাকেই আইনের আওতায় আনা হবে।