আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে আ.লীগ নেতা

‘নৌকা নিয়েও কেন্দ্রে এজেন্ট দিতে পারলে এলাকা ছেড়ে দেবো’

জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান ও পিরোজপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে উদ্দেশ করে ভান্ডারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘আপনি নৌকা মার্কা নিয়েও ভান্ডারিয়া উপজেলার প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে এজেন্ট দিতে পারলে আমরা সেদিন ভান্ডারিয়া ছেড়ে চলে যাবো’।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) রাতে ঢাকার পান্থপথের সামারাই কনভেনশন সেন্টারে ঢাকাস্থ ভান্ডারিয়াবাসীর আয়োজনে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

মিরাজুল ইসলামসহ অন্যদের দেওয়া বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যেটি এ প্রতিনিধির হাতেও এসেছে।

সেখানে মিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আপনি (আনোয়ার হোসেন মঞ্জু) নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবো লিখেছেন। লেখাটা দেখে আমি খুব আনন্দ পেয়েছি। এটা ভান্ডারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সার্থকতা।’

মঞ্জুকে উদ্দেশ করে মিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আপনি ভান্ডারিয়ায় বলেছিলেন, কবুতরের খোপে হাত দিলে সাপ পাওয়া যায় কিন্তু একটা আওয়ামী লীগ পাওয়া যেত না। আরেক সভায় বলেছিলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ৪০টি  আসন পাবে না। এ রকম অনেক কিছুই বলেছেন। এখন আপনার নৌকায় ওঠার খায়েশ দেখে খুব আনন্দ পেয়েছি। আপনি  হয়তো জানেন না আপনি যেদিন নৌকায় উঠতে যাবেন সেদিন ভান্ডারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারিসহ সহযোগী সংগঠন আপনার ওই দল থেকে নেমে যাবে। তখন আপনি কী নিয়ে নির্বাচন করবেন? কোন ভরসায় আপনি যাবেন?’

এ সময় মিরাজুল ইসলাম সভায় উপস্থিত ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির কাছে জানতে চান, ‘আনোয়ার হোসেন মঞ্জু যদি নৌকা নিয়ে আসেন তখন আপনারা তার সঙ্গে থাকবেন?’ তখন সবাই না না বলে ওঠেন। 

আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘মঞ্জু সাহেবের কেন এমন বুদ্ধি হলো যে নৌকায় আসবেন। আপনি মনে হয় বুঝতে পারতেছেন নৌকা ছাড়া এখন আর উপায় নেই। কিন্তু ভান্ডারিয়ায় আপনি যদি সব সেন্টারে নৌকা মার্কা নিয়েও এজেন্ট দিতে পারেন আমি নির্বাচনের দিন ভান্ডারিয়া ছেড়ে চলে যাবো। গত পৌরসভা নির্বাচনে আপনি ভান্ডারিয়ায় অর্থ বিত্ত, জামাই (নিক্সন চৌধুরী), কত নিয়ে গিয়েছিলেন। আপনি সে সময় কিন্তু দেখে এসেছেন। আবার এমন না হয় আপনার আম ছালা সব যায়। আপনার জন্মস্থান ভান্ডারিয়ায়তো এজেন্ট দিতে পারবেনা না, কাউখালী, স্বরূপকাঠীতে কী করবেন?’

সভায় পিরোজপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মহারাজ বলেন, ‘আনোয়ার হোসেন মঞ্জু আমাদেরকে মাদক ব্যবসায়ী বানাতে চান। আমাদেরকে রাজাকার পুত্র বানাতে চান। ভান্ডারিয়ার জনগণ ও জনপ্রতিনিধি ও নেতৃবৃন্দের মনের ভাব বুঝে আসেন। আমি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। দলীয় মনোনয়ন ক্রয় করে দাখিল করেছি। আশা করছি দল আমাকে মনোনয়ন দেবে।’

সভায় সভাপতিত্ব করেন ভান্ডারিয়া পৌরসভার মেয়র ও ভান্ডারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফাইজুর রশীদ খসরু। সেখানে বক্তব্য রাখেন- উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মশিউর হমান মৃধা, ব্যবসায়ী মজিবুর রহমান মৃধা, তালুকদার সরোয়ার হোসেন, অ্যাডভোকেট সিদ্দিকুর রহমান, ধাওয়া ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান টুলু, ভান্ডারিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি তালুকদার এনামুল কবির টিপু।