ডাকাত সন্দেহে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ১৭ কর্মকর্তাকে আটক করলো গ্রামবাসী

বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় ডাকাত সন্দেহে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালকসহ ১৭ কর্মকর্তাকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে গ্রামবাসী। শনিবার রাতে উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের বাগধা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। রবিবার (০৭ এপ্রিল) দুপুরে বিষয়টি জানিয়েছেন আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলম চাঁদ। 

বাগধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাবুল ভাট্টি বলেন, ‘শনিবার রাত ১২টার দিকে বাগধা বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছে খবর আসে দুটি স্পিডবোটে ২০-২৫ জনের ডাকাত দল উজিরপুরের সাতলা থেকে বাগধা বাজারের দিকে আসছে। এ খবরে গ্রামবাসী মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে সবাইকে ডাকাতদের প্রতিরোধের আহ্বান জানান। পরে দুটি স্পিডবোটে বাগধা বাজারে আসা ১৭ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ব্যবসায়ীরা। প্রথমে তারা নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দেন, পরে পরিচয়পত্র দেখতে চাইলে বেশিরভাগই দেখাতে না পারায় তাদের সন্দেহ হয়। এ অবস্থায় তাদের বাগধা বাজারের একটি দোকানে বসিয়ে রেখে আমাকে এবং আগৈলঝাড়া থানা পুলিশকে জানান তারা। ইতোমধ্যে বাজারে ডাকাত ধরা পড়ার সংবাদ ছড়িয়ে পড়ায় ঘটনাস্থলে শতাধিক গ্রামবাসী ও ব্যবসায়ীরা জড়ো হন এবং বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন। দ্রুত পুলিশ গিয়ে লাঠিপেটা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। পরে ১৭ জনকে উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হয়।’

আগৈলঝাড়া থানার ওসি মো. আলম চাঁদ বলেন, ‘১৭ জনকে থানায় আনার পর তারা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সদস্য বলে পরিচয় দেন। এরপর বরিশাল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মো. এনায়েত হোসেনের সঙ্গে কথা বলে পরিচয় নিশ্চিত হয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।’

অধিদফতরের সহকারী পরিচালকের বরাত দিয়ে ওসি বলেন, ‘শনিবার রাতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক এনায়েত হোসেন, উপপরিদর্শক ইশতিয়াক, আব্দুল মজিদ, সহকারী উপপরিদর্শক ফারুক হোসেনসহ ১৭ জনের একটি দল মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে বাগধা বাজারে আসেন। সেখানে গিয়ে বাজারের ব্যবসায়ীদের তোপের মুখে পড়েন। পরে তাদের উদ্ধার করা হয়।’ 

অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মো. এনায়েত হোসেন বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাদকের একটি বড় চালান ‍আটক করে উজিরপুর থেকে স্পিডবোটযোগে বাগধা বাজারে যাই আমরা। যাওয়ার আগে কে বা কারা প্রচার করে দেয়, ডাকাত আসার খবর। এ কারণে ব্যবসায়ী ও গ্রামবাসী আমাদের আটক করে একটি দোকানে বসিয়ে রাখেন। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, পুলিশ এসে উত্তেজিত জনতার কাছ থেকে আমাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর আমাদের ছেড়ে দেয় পুলিশ।’