সমিতির কার্যালয়ে ভাঙচুরের প্রতিবাদে বরিশালে ফার্মেসি মালিকদের ধর্মঘট, পরে প্রত্যাহার

বরিশাল নগরে ওষুধ বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের সংগঠন কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির কার্যালয়ে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে ডাকা ধর্মঘট আড়াই ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করেছেন ফার্মেসির মালিকরা।

রবিবার (০৫ জানুয়ারি) বিকাল ৫টার দিকে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হলে নগরের পাঁচ শতাধিক ফার্মেসি বন্ধ করে দেওয়া হয়। অবরোধ করা হয় শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনের সড়ক। পরে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় করা মামলায় জড়িত দুজনকে গ্রেফতারের কথা জেনে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়। বিষয়টি জানিয়েছেন সমিতির বরিশাল জেলার জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আব্দুস সালাম।

কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির কম্পিউটার অপারেটর দেবাশিষ হালদার বলেন, আমাদের সমিতির ভবনের পাশের আবাসিক হোটেল আইএকে পর্যটন হোটেলের মালিক ইকবাল আজম জমির মালিকানা দাবি করে ২১টি মামলা করেছেন। জমি বৈধভাবে কেনার দলিল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির রয়েছে। তবু ইকবাল আজমের লোকজন ভোরে জমি দখলের জন্য ভবন ভাঙচুর করেছেন। এ সময় কার্যালয় ভবনে থাকা নগদ অর্থও লুট হয়েছে। এ ঘটনায় সমিতির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আব্দুস সালাম কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেছেন। মামলায় চার জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ২০ জনকে আসামি করা হয়। পরে আমরা আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে বিকাল ৫টার দিকে নগরের পাঁচ শতাধিক ফার্মেসি বন্ধ করে ধর্মঘট ডাকি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে আইএকে পর্যটন হোটেলের মালিক ইকবাল আজমের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি।

এদিকে, ফার্মেসি বন্ধের পর বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী ও তাদের স্বজনরা বিপাকে পড়েন। প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনতে না পেরে রোগীর স্বজনরা হাসপাতালের সামনে বান্দ রোড অবরোধে নামেন। রাত পৌনে ৮টার দিকে ফার্মেসি খুলে দিলে স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি।

বরিশাল মহানগরের পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম ধর্মঘটকারীদের ডেকে নিয়ে জানান, মামলায় এজাহারভুক্ত চার জনের মধ্যে দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের আশ্বাসে ধর্মঘট স্থগিতের পর ফার্মেসি খুলে দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির বরিশাল জেলার জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আব্দুস সালাম বলেন, ধর্মঘট শুরু পর মহানগর পুলিশ কমিশনার নিজ কার্যালয়ে আমাদের ডেকে নেন। সেখানে কমিশনার আমাদের জানিয়েছেন, মামলার দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি দুজনকেও গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়েছেন। এজন্য ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছি আমরা।

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ‍‘সন্ধ্যায় ইকবাল জাহান খানকে প্রধান করে চার জন এজাহারভুক্ত এবং অজ্ঞাতনামা ২০ জনকে আসামি করে মামলা করেন সমিতির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আব্দুস সালাম। এই মামলায় দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইকবালকে গ্রেফতারে পুলিশ মাঠে আছে। পুলিশ কমিশনার সমিতির নেতৃবৃন্দকে নিয়ে বৈঠক করে আসামিদের গ্রেফতারের প্রতিশ্রুতি দিলে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেন তারা। এখন নগরের সব ফার্মেসি খোলা রয়েছে।’