আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগে ছয় পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

চট্টগ্রামএক ব্যক্তিকে আটকের পর হেফাজতে রেখে নির্যাতনের অভিযোগে এক পরিদর্শকসহ ছয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইয়াছিন শাখাওয়াত ভূইয়া নামে এক ব্যক্তি বুধবার (২৪ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আবু ছালেম মোহাম্মদ নোমানের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার এজহারে তিনি অভিযোগ করেন, তার ছোট ভাই ইয়াছিন আওয়াজ ভূইয়া রওনককে আটক করে পুলিশ সদস্যরা নির্যাতন চালিয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৮-১০ পুলিশ সদস্যকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা হলেন, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জহিরুল ইসলাম, এএসআই শীলাব্রত বড়ুয়া, ফাঁড়িতে দায়িত্বরত কনস্টেবল মাহবুবুর রহমান, ফিরোজ মিয়া, নায়েক হামিদুর রহমান ও আমির।

বাদীপক্ষের আইনজীবী ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রওনককে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে পিবিআইকে পরিদর্শক পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তার মাধ্যমে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আদালত চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তিন সদস্যের বোর্ড গঠন করে পরীক্ষার মাধ্যমে রওনকের শরীরে আঘাতের বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। ৩০ দিনের মধ্যে আদালত উভয় পক্ষকে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।’

আদালত সূত্র জানায়, গত ২০ জানুয়ারি রওনক চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। এসময় সাদা পোশাকের এক পুলিশ সদস্যের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সেখানে কর্মরত পুলিশ সদস্যরা সেখানে জড়ো হলে রওনক দ্রুত ওই স্থান ত্যাগ করার চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ সদস্যরা তাকে আটক করেন। পরে তারা তাকে বেধড়ক পেটান। এক পুলিশ সদস্যের অস্ত্রের আঘাতে রওনকের বাম হাত ভেঙে যায়। আরেকজন তার হাতের আঙ্গুলের নখ তুলে ফেলার চেষ্টা করেন বলেও এজহারে অভিযোগ আনা হয়েছে। অসদাচরণের অভিযোগে রওনককে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে সে কারাগারে আছে।  

এজাহারে আরও অভিযোগ করা হয়, চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রওনকের সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের দেখা করতে দেওয়া হয়নি। পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রভাবে রওনক সুচিকিৎসা থেকেও বঞ্চিত হয়েছেন।

চমেক পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ওইদিন যুবলীগ পরিচয়ধারী স্থানীয় সন্ত্রাসী আলাউদ্দিন আলোর সঙ্গে চকেম পুলিশ ফাঁড়ির এক সদস্যের কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে আলাউদ্দিন প্রথমে চলে যায়। তবে পরে আবার রওনকসহ ১৫-২০ জনকে নিয়ে ফিরে আসে। তারা ফিরোজ নামের এক পুলিশ সদস্যের ওপর চড়াও হয়। পরে অন্য পুলিশ সদস্যরা তাদের প্রতিহত করতে এগিয়ে আসে। এ সময় রওনককে আটক করা হয়।’