একরাম হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হককথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ টেকনাফ পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর একরামুল হক হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের হত্যাকাণ্ড বিচারবহির্ভূত। দেশের জন্য এটি কাম্য নয়।’ রবিবার (২৪ জুন) বিকাল ৩টার দিকে কক্সবাজারের টেকনাফে নিহত কাউন্সিলর একরামুলের বাড়ি পরির্দশন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় একরামুলের পরিবারের সদস্যদের খোঁজ নেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান। তবে একরামুলের স্ত্রী ও মেয়েরা তখন বাড়িতে ছিলেন না। তারা চট্রগ্রামে আছেন বলে জানান প্রতিবেশীরা।

কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ‘ এভাবে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে মাদক নির্মুল করা সম্ভব নয়। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। মাদকবিরোধী অভিযানের নামে এভাবে মানুষ হত্যা আইনসিদ্ধ নয়। তালিকা যাচাই-বাচাই করে অভিযান চালিয়ে আসল মাদক অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। অভিযানের সময় কোনও মানুষের যেন মৃত্যু না হয়, সেদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারকে নজর রাখতে হবে।’

মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন,‘কাউন্সিলর একরামুল হকের অডিও ক্লিপ শুনে আমরা খবুই মর্মাহত। এভাবে যেন আর কোনও নিরীহ ব্যাক্তির মৃত্যু না হয়, সে ব্যাপারে আমরা সরকারকে বার বার নোটিশ করছি ।’ তিনি বলেন, ‘নিহত কাউন্সিলর একরামুল হকের মেয়েদের ভরণ-পোষণের দায়ভার সরকারকে নিতে হবে। এমনকি একরামুল হকের পরিবারের কোনও সদস্য যেন হয়রানির শিকার না হয় সেদিকেও নজর দিতে হবে সরকারকে।’

এসময় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে ছিলেন, কক্সবাজার জেলা জজ পরিচালক আল মাহামুদ ফয়জুল কবির, সার্বক্ষণিক দায়িত্বে থাকা মো. নজরুল ইসলাম, জেলা মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান হাজী আরফান আশিক। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল হাসান, টেকনাফ মডেল থানার ওসি রনজিত কুমার বড়ুয়া।

প্রসঙ্গত, গত ২৭ মে রাত সাড়ে ১২টায় কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের নোয়াখালিয়াপাড়ায় র্যায়বের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর একরামুল হক। এর পর গত ৩১ মে কক্সবাজার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে একরামুল হককে মাদকবিরোধী অভিযানের নামে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তার স্ত্রী আয়েশা বেগম। সেসময় হাত্যাকাণ্ডের একটি অডিও ক্লিপও প্রকাশ করা হয়।

একরামুল হক টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালী পাড়ার মৃত আবদুস সাত্তারের ছেলে। তিনি একই ওয়ার্ড থেকে পরপর তিনবার নির্বাচিত কাউন্সিলর। এছাড়া তিনি টেকনাফ উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি, টেকনাফ বাস স্টেশন ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও টেকনাফ মাইক্রো শ্রমিক ইউনিয়নের আহ্বায়ক ছিলেন।