কাপ্তাই হ্রদের পানি কমেছে

দেরিতে হলেও শুরু হয়েছে জলে ভাসা জমিতে চাষাবাদ

Rangamati pic (1)দেরিতে হলেও শুরু হয়েছে কাপ্তাই হ্রদের জলনিমজ্জিত জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ। হ্রদের পানি না কমায় এবার কৃষকরা দেরিতে বীজতলা তৈরি ও চাষাবাদ শুরু করেছেন। ১৯৬০ সালে কাপ্তাই বাঁধ তৈরির পর পার্বত্য চট্টগ্রামের ৫৪ হাজার একর ধানি জমি হ্রদের পানিতে তলিয়ে যায়। হ্রদের পানি ওঠা-নামার মধ্যবর্তী সময়ে জমি চাষ করার সুযোগ সৃষ্টি হয়। এসব জমিগুলোকে স্থানীয়ভাবে ‘জলে ভাসা জমি’ বলা হয়। বর্ষাকালে বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে পানি প্রবাহের কারণে কাপ্তাই হ্রদে জুন থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১০৯ এমএসএল পানি ধরে রাখা হয়। এসময় পানি ব্যবহার করে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।

কৃষক মনি শংকর চাকমা জানিয়েছেন, নভেম্বর থেকে পানি কমে আসলে হ্রদের অববাহিকায় জমি চাষ শুরু করেন কৃষকরা। সাধারণত নভেম্বর থেকে বীজতলা তৈরির কাজ শুরু হলেও অনেকেই সময় মতো পানি না কমার কারণে বিলম্বে বীজতলা তৈরি করেছেন। অনেকেই এখনও চাষাবাদ শুরু করতে পারেননি।

‘পানি ছাড়তে দেরি হলে চাষাবাদ শুরু হতে দেরি হয় উল্লেখ করে মঙ্গলা দেবী চাকমা অভিযোগ করেছেন, অনেক সময়ই তারা ফসল তুলতে পারেন না। যদি সঠিক সময়ে পানি কমে, তাহলে এই চাষাবাদ করেই অনেকে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে। মার্চ-এপ্রিলে বর্ষা শুরু হলে ধান পাকে। বর্ষার পানির কারণে নিচের অংশের ধান গত কয়েক বছর ধরে কাটা যায়নি।

আলোরানী চাকমার ভাষ্য, ‘আমার জমিতে ৪০ ভাগের মতো চারা রোপণ রোপন করতে পেরেছি। নিচের জমিতে এখনো পানি সরেনি। সরলে চারা রোপণ শেষ করব। নিচের জমির ধান খেতে পারব কি না জানি না। তারপরও খাওয়ার আশায় লাগাচ্ছি।’

রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক পবন কুমার চাকমা বলেছেন, ‘চলতি বছরে ৭০২৬ হেক্টর জমিতে বোরচাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ‘জলে ভাসা জমি’ ৪২৫ হেক্টর। প্রয়োজন অনুপাতে পানি কমলে আমরা আমাদের লক্ষ্যমাত্র আমরা অর্জন করতে পারব। আর তা যদি না হয় তাহলে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ফলন কম পাওয়া যাবে।’

রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্র জানায়, রাঙামাটি জেলার ৪০ ভাগ খাদ্য উৎপাদন হয় এ জলে ভাসা জমিতে। প্রায় চার হাজার হেক্টর জমিতে ১৬ হাজার মেট্রিক টনের বেশি খাদ্য শস্য উৎপাদন হয়। পানি কমানোর ব্যবস্থা না করলে কৃষকদের খাদ্য সঙ্কটে পড়তে হবে জানান কৃষকরা।