চট্টগ্রামে সংঘবদ্ধ চোর দলের ১১ সদস্য গ্রেফতার

সংঘবদ্ধ চোর দলের ১১ সদস্য

চট্টগ্রামে সংঘবদ্ধ চোর দলের মূলহোতাসহ ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার (২৪ আগস্ট) রাতে নগরীর কোতোয়ালী থানাধীন লালদিঘীর পাড়স্থ জেলা পরিষদ সুপার মার্কেটের ৩য় তলায় অবস্থিত আবাসিক হোটেল থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে দুটি এলজি, একটি লোহার রড কাটার, চারটি কার্তুজ ও একটি রড উদ্ধার করে পুলিশ।

নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মেহেদী হাসান এ তথ্য জানিয়েছেন। রবিবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে উপ-কমিশনার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ তথ্য জানান।

গ্রেফতারকৃতরা হলো– মো. লিয়াকত হোসেন (২৪), মো. আকরাম (২৩), মো. হানিফ (৪০), মো. তৌফিক (২৬), মো. মাসুম (২৬), নয়ন (২২), মল্লিক (২৫), মিলন (২৫), কামাল হোসেন (২৮), জামাল (৩০) ও ভুসি কামাল (৩২)। এর মধ্যে লিয়াকত, নয়ন ও মল্লিকের বাড়ি চট্টগ্রামে। কামাল হোসেনের বাড়ি নরসিংদীতে। অন্যদের সবার বাড়ি কুমিল্লায়।

মেহেদী হাসান বলেন, ‘চোর চক্রের সদস্যরা দেশের বিভিন্ন জেলার গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক এলাকার বিভিন্ন শো-রুম, বড় কাপড়ের দোকান, বড় মুদির দোকান, সিগারেট বা বিভিন্ন ডিস্ট্রিবিউটরের অফিস, বিকাশের দোকানসহ যেসব দোকানে বেশি টাকা-পয়সা লেনদেন হয় অথবা রাতের বেলায় ক্যাশে বেশি পরিমাণ টাকা থাকে, দিনের বেলা মার্কেটে ঘুরে ঘুরে সেসব টার্গেট করে। পরে রাতের বেলায় ওইসব দোকানে চুরি করে। গত জুন মাসে ২৭ তারিখ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তারা কোতোয়ালী থানাধীন নন্দনকানন গোলাপ সিংহ লেইনের নিউ লাকি ইলেকট্রিক কোম্পানি নামক দোকানের শার্টার কৌশলে ফাঁকা করে ভেতরে প্রবেশ করে সেখান থেকে পৌনে দুই লাখ টাকা চুরি করে। এর আগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাত আড়াইটার দিকে জুবলী রোডের আমতল সিডিএ মার্কেটের ৩য় তলার কাজী কম্পিউটারস দোকানের শার্টারের তালা কেটে ১২টি ল্যাপটপ নিয়ে যায়। এসব ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ এই চোর চক্রের সন্ধান পায়। পরে শনিবার (২৪ আগস্ট) রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আসামিরা তিন ধাপে চুরি করতো। প্রথম ধাপে চক্রের প্রধান হানিফ বিভিন্ন মার্কেট, বানিজ্যিক এলাকা ঘুরে ঘুরে চুরির জন্য দোকান বা অফিস টার্গেট করতো৷ দ্বিতীয় ধাপে টার্গেট করা দোকান বা অফিসগুলো এই চক্রের সেকেন্ড ইন কমান্ড কামাল রেকি করতো৷ তার গ্রিন সিগনাল পেলেই কাজ শুরু হতো তৃতীয় ধাপের। এই ধাপে প্রয়োজনীয় লোকজন ও সরঞ্জাম নিয়ে সুবিধাজনক সময়ে চুরি করতে যেতো চক্রের বাকি সদস্যরা৷ চুরি করার সময় তারা কিছু সাংকেতিক শব্দ ব্যবহার করতো।’

উপ-কমিশনার মেহেদী হাসান বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা পুলিশকে অনেক তথ্য দিয়েছে। চুরির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তাদের শ্যোন অ্যারেস্ট দেখিয়ে ওইসব মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে এবং আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আব্দুর রউফ, কোতোয়ালী জোনের ওসি নোবেল চাকমা ও কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসীন, পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।