বেগমগঞ্জে নির্যাতনের শিকার নারীর বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ

আলামতের তালিকা করা হচ্ছে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে নির্যাতনের শিকার নারীর বসতঘর থেকে রবিবার (১১ অক্টোবর) সকালে ব্যবহৃত পোশাক, বালিশ, বিছানার চাদর এবং কয়েকটি কার্টনসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ সময় বাড়ির পাশে খালে এবং পুকুরে আরও আলামত উদ্ধারের জন্য জাল ফেলে ও ডুবুরি নামিয়ে খোঁজাখুঁজি করা হয়।



এদিকে, আজ সন্ধ্যা ৬টায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাশফিকুল হকের আদালতে প্রধান আসামি বাদল ও ৫ নম্বর আসামি সাজু ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এ নিয়ে ৭ জন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। এছাড়া রিমান্ড শেষে ৯ নম্বর আসামি রহমত উল্যাকে আদালতে তোলা হলে বিজ্ঞ আদালত তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করে। 

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক মামুনুর রশিদ পাটোয়ারি বলেন, স্থানীয় লোকজনকে সাক্ষী করে আলামতগুলোর জব্দ তালিকা প্রস্তুত করে জেলা পিবিআই কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। 

গত শুক্রবার পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশনা অনুযায়ী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে নির্যাতিতার দায়ের করা দুটি মামলা পিবিআইতে স্থানান্তর করা হয়।

আলামত নিয়ে যাওয়া হচ্ছে প্রসঙ্গত, ২ সেপ্টেম্বর রাতে বেগমগঞ্জের একলাশপুর ইউনিয়নের খালপাড় এলাকায় ওই গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন চালানো হয়। ঘটনার ৩২ দিন পর ৪ অক্টোবর দুপুরে নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার ওই নারী বাদী হয়ে ৪ অক্টোবর রাতে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন। দুই মামলার এজাহারে ৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৭-৮ জনকে আসামি করেন। পরে ৬ অক্টোবর রাতে ঘটনার মূল হোতা দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার ও তার সহযোগী কালামের বিরুদ্ধে থানায় আরেকটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে এজাহারভুক্ত ৬ জন এবং তদন্তে যুক্ত করা হয়েছে ৫ জনকে। ৫ আসামিরা ইতোমধ্যে ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, নির্যাতনকারীরা ওই গৃহবধূর পোশাক কেড়ে নিয়ে তার বিরুদ্ধে কিছু একটা বলতে থাকে। তিনি প্রাণপণে নিজেকে রক্ষার চেষ্টা করেন এবং হামলাকারীদের ‘বাবা’ ডাকেন, তাদের পায়ে ধরেন। কিন্তু, তারা ভিডিও ধারণ বন্ধ করেনি। বরং হামলাকারীদের একজন তার মুখমণ্ডলে লাথি মারে ও পা দিয়ে মুখসহ শরীর মাড়িয়ে দেয়। এরপর একটা লাঠি দিয়ে মাঝে মাঝেই আঘাত করতে থাকে। এ সময় ঘটনাটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার উল্লাস প্রকাশ করে ‘ফেসবুক’ ‘ফেসবুক’ বলে চেঁচায় আরেকজন।