জেএমসেন ভবন রক্ষায় সম্ভাব্য সব সহযোগিতা করবো: হানিফ

ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতি বিজড়িত দেশপ্রিয় যতীন্দ্র মোহন সেন গুপ্তের বাড়ি (জেএমসেন ভবন) রক্ষায় সকল প্রকার সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। তিনি বলেছেন, রানা দাশগুপ্ত আমাকে এখানে আসতে বলেছেন। উনার কাছ থেকে ভবনটির অতীত ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পেরেছি। এখানে কোনও বক্তব্য দিতে আসিনি। দেখতে এসেছি। আমি শুধু একটি বিষয়ে আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, সেটা হলো যে এটি একটি ঐতিহাসিক ভবন। ভবনটি অতীত ঐতিহ্য ধারণ করে যাতে থাকতে পারে সে বিষয়ে আমাদের সহায়তা থাকবে।’

বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে নগরীর রহমতগঞ্জে সম্প্রতি দখল করতে গিয়ে একাংশ ভেঙে ফেলা ঐতিহাসিক ভবনটি পরিদর্শনে যান মাহবুব-উল আলম হানিফ। সেখানে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ আশ্বাস দিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন এবং স্বাধীনতা আন্দোলনের স্মৃতি জড়িত আছে, ভবনটি ইতিহাসের অংশ। ভবনটি কেন হঠাৎ করে এরকম হলো আমার জানা নেই। দেখলাম এখানে কতগুলো নোটিশ টাঙানো আছে আদালতের। বাড়িটিতে হরেক রকম সাইনবোর্ড লাগানোটা আমাদের কাম্য নয়।

তিনি আরও বলেন, এটুকু আশ্বস্ত করে যাচ্ছি বিষয়টা আজকে পুরোপুরি জানলাম। আজকেই জেলা প্রশাসককে বলবো ঘটনাটি যথাযথভাবে দেখতে। কেন কী কারণে ঘটনাগুলো ঘটেছে এবং আইনসম্মত মীমাংসা সেটি দ্রুত যেন হয়। আশাকরি দ্রুত ঘটনাটি নিষ্পত্তি হবে। ভবনটি অতীত ঐতিহ্য ধারণ করে যাতে থাকতে পারে,  সে জন্য ঐতিহাসিক বাড়িটি রক্ষায় সকল প্রকার সহযোগিতা করা হবে।

বাড়িটি পরিদর্শনকালে মাহবুব-উল আলম হানিফের সঙ্গে আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন। এর আগে বাড়ির সামনে তাৎক্ষণিক অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

অবস্থান কর্মসূচিতে মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি তাপস হোড়, ওয়ার্কার্স পার্টির চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রাশেদ হাসান এবং চট্টগ্রাম ইতিহাস, সংস্কৃতি সংরক্ষণ কেন্দ্রের সভাপতি আলীউর রহমান বক্তব্য রাখেন।

রানা দাশগুপ্ত বলেন, ভূমিদস্যুরা অপকৌশলে আদালতের একটি রায় এনেছে। জেলা প্রশাসন যেখানে অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে এই সম্পত্তির কাস্টডিয়ান তাদেরকে সেখানে পক্ষভুক্ত করা হয়নি। শিশুবাগকেও মামলায় প্রতিপক্ষ করা হয়নি। জেলা প্রশাসনের সম্পূর্ণ অগোচরে কিভাবে তারা এই মামলায় রায় পেলো? সেদিন মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান দিয়ে এই বাড়িটিতে ভূমিদস্যুরা হামলে পড়েছে। ৭২ এ এভাবে দেশে বিভিন্ন স্থানে হামলা হয়েছিল। আজ চট্টগ্রামে আমরা এ পরিস্থিতি দেখতে পাচ্ছি।‘

তিনি আরও বলেন, ‘ভবনটি ভাঙার দায়িত্ব তাদের দিলো কে? সেদিন প্রশাসনের কর্মকর্তারা সব পক্ষের সামনে বলেছে, আপনারা চলে যান আমরা তালা দিয়ে দেবো। তখন আমি বলেছিলাম, এর দায়িত্ব স্থানীয় সাবেক কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমনকে দিতে। প্রশাসন সম্মত হয়েছিল। আমরা চলে গিয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমনের হাতে চাবি আসেনি। কিন্তু দুস্কৃতকারীরা এখানে এখনও থাকে। বাইরে থেকে তাদের জন্য খাবার আসে। পুলিশ তাদের বাধা দেয় না। ভেতরে তারা আলো আর সিসিটিভি ক্যামরা লাগিয়েছে। সেগুলো কিভাবে হচ্ছে? এই প্রশ্ন আপনাদের কাছে রেখে পুরো পরিস্থিতি জানিয়ে গেলাম।’