নোয়াখালীতে কঠোর বিধিনিষেধ পালনে স্থানীয়দের অনীহা

নোয়াখালীতে লকডাউন ও স্বাস্থ্য বিধিমালা প্রতিপালনে অনীহা দেখা গেছে পৌরসভা ও সদর উপজেলার ছয় ইউনিয়নে। এর আগে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় শুক্রবার (৪ জুন) বিকালে নোয়াখালী পৌরসভা এবং সদর উপজেলার নোয়ান্নই, বিনোদপুর, নেয়াজপুর, অশ্বদিয়া ও নোয়াখালী ইউনিয়নে বিধিনিষেধ আরোপ করে লকডাউন ঘোষণা করেছে প্রশাসন। শনিবার (৫ জুন) ভোর ৬টা থেকে লকডাউন শুরু হলেও তা চলছে ঢিলেঢালাভাবে। শহরের বিভিন্ন স্থানে প্রশাসনের তৎপরতা দেখা গেছে।

জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, জেলার সোনাপুর থেকে দূরপাল্লার কোন যানবাহন না ছাড়লেও অভ্যন্তরীণ সড়কে সিএনজি চালিত অটোরিকশা, ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ও ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করছে। শর্তসাপেক্ষে দুই জন যাত্রী নিয়ে সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলার কথা থাকলেও, কেউ বিধিনিষেধ মানছে না। সিএনজি ও অটোরিকশাগুলোতে ৫ থেকে ৭ জন করে যাত্রী চলাচল করছে।

তবে শহরের দোকানপাট ও শপিংমল বন্ধ রয়েছে। বিভিন্ন স্থানে মানুষের ভিড় ছিল লক্ষ্যণীয়। লকডাউন ও কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবধি মানার নির্দেশনা থাকলেও অনেকেই মাস্ক ব্যবহার করছেন না, স্বাস্থ্যবিধি মানতেও যেন তারা নারাজ। তবে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা দেখা গেছে। বিভিন্ন চেকপোস্টে আইন অমান্য ও স্বাস্থ্যবিধি না মানায় কয়েকটি সিএনজি অটোরিকশা ও যাত্রীকে জরিমানা করতেও দেখা গেছে।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার জানান, ঈদ পরবর্তী সময়ে জেলায় করোনা সংক্রমণ আগের চেয়ে কয়েকগুন বৃদ্ধি পায়। নোয়াখালী পৌরসভা ও সদর উপজেলাতেও সংক্রমণ বেড়েছে। তাই জেলা করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কমিটির জরুরি বৈঠকের মাধ্যমে নোয়াখালী পৌরসভা ও সদরের ছয়টি ইউনিয়ন এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন ঘোষণা করা হয়। ৫ জুন ভোর ৬টা থেকে ১১ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত লকডাউন বলবৎ থাকবে।

কঠোর বিধিনিষেধ মেনে চলতে প্রশাসনের তৎপরতাজেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান জানান, উল্লিখিত এলাকায় আরোপিত বিধিনিষেধ প্রতিপালন নিশ্চিত করতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে শনিবার দিনব্যাপী ছয়টি ভ্রাম্যমাণ আদালত ও স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে চারটি টিম মাঠে কাজ করছে। এসময় মোট ৪৭ টি মামলায় ৩৬ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এছাড়া সাধারণ মানুষকে আরোপিত বিধিনিষেধ ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানানো হয় এবং যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার বিষয়েও প্রচারণা চালানো হয়।

তিনি আরও বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় পুলিশ ফোর্স দিয়ে সহযোগিতা করেছে নোয়াখালী জেলা পুলিশ। করোনা সংক্রমণরোধে আরোপিত বিধিনিষেধ নিশ্চিতকরণে জেলা প্রশাসনের এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।