৭ দিনেও উদ্ধার হয়নি ডুবে যাওয়া জাহাজ

সাত দিনেও উদ্ধার হয়নি পদ্মা সেতুর প্রায় এক হাজার ২০০ মেট্রিক টন লোহার মালামাল নিয়ে বঙ্গোপসাগরের সন্দ্বীপ চ্যানেলে ডুবে যাওয়া এমভি হ্যাং গ্যাং-১ জাহাজটি। মঙ্গলবার (২০ জুলাই) রাত ৭টা পর্যন্ত জাহাজটি উদ্ধার করা যায়নি বলে জানিয়েছে কোস্টগার্ড।

কোস্টগার্ডের কন্টিজেন কমান্ডার মো. রুকনউদ্দিন বলেন, ‘উদ্ধার কাজের জন্য ক্রেনসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি পাঠানো হয়েছে বলে শুনেছি। তবে উদ্ধার কাজ শুরু হয়েছে কিনা তা আমাদের জানানো হয়নি। আমাদের কাজ ডুবে যাওয়া জাহাজের নিরাপত্তা দেওয়া। সেটি আমরা করে যাচ্ছি।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাহাজটি উদ্ধারের জন্য ঘটনাস্থলের পাশে রয়েছে ক্রেন, ক্রেনবাহী আরেকটি জাহাজ ও লাইফবোট। ভাটার সময় মূলত উদ্ধার কাজ শুরু হবে। এক হাজার টন সক্ষমতার বার্জ থেকে ক্রেনের মাধ্যমে ডুবে যাওয়া জাহাজের মালামাল উঠিয়ে আনা হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পদ্মা সেতুর ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘যে স্থানে জাহাজ ডুবেছে সেখানে যোগাযোগ করা খুবই কঠিন। গত রবিবার উদ্ধার কাজের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ঘটনাস্থলে পৌঁছে গেছে। তবে এখন পর্যন্ত উদ্ধার কাজ শুরু হয়নি। ডুবে যাওয়া জাহাজে আনুমানিক ১২শ’ টন লোহার মালামাল ছিল। সব মালামাল উঠানো সম্ভব না হলে পদ্মা সেতুর কাজে ধীরগতি আসবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য মালামাল উদ্ধার করা। ডুবে যাওয়া জাহাজ তুলবেন মালিক। জাহাজে পদ্মা সেতুর যেসব মালামাল রয়েছে, সেগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’

সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) নূর আহমেদ বলেন, ‘আমি খোঁজ নিয়েছিলাম। এখনও উদ্ধার কাজ শুরু হয়নি। ঘটনাস্থল এমন জায়গায়; যেখানে সহজে যোগাযোগ করা যায় না। আর তারাও আমাদের কিছু জানায়নি।’

জানতে চাইলে পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প ব্যবস্থাপক (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের বলেন, আমি ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়ি এসেছি। উদ্ধার কাজ সম্পর্কে কিছুই জানি না।

চট্টগ্রাম থেকে মুন্সীগঞ্জে আসার পথে ১৩ জুলাই সকাল ১০টার দিকে সন্দ্বীপ নতুন চ্যানেলের ৪ ও ৫ নম্বর পয়েন্টে ডুবে থাকা একটি জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা লেগে জাহাজটি ডুবে যায়। এ সময় জাহাজে থাকা ১৩ জন স্টাফকে উদ্ধার করেন স্থানীয় জেলেরা। ডুবে যাওয়া জাহাজে প্রায় ১৮ কোটি টাকার মালামাল রয়েছে।

ঘটনার পর এমভি হ্যাং গ্যাং-১ জাহাজের মাস্টার আল আমিন শেখ বলেছিলেন, ‘জাহাজটি চট্টগ্রাম থেকে পদ্মা সেতুর মালামাল নিয়ে মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় যাওয়ার পথে সন্দ্বীপ চ্যানেলে স্টিয়ারিং ফেল করে। এ সময় সাগরে ডুবে থাকা আরেকটি জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে যায়। মূলত দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে স্টিয়ারিং ফেল করে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। জাহাজটি সন্দ্বীপ নতুন চ্যানেলের ৪-৫ নম্বর পয়েন্টে ডুবেছে। জোয়ার এলে জাহাজটি ৫-৬ ফুট পানির নিচে তলিয়ে যায়। আবার ভাটার সময় পানির ওপরে ভেসে ওঠে।’