কম্বলচাপা দিয়ে শ্বশুর-শাশুড়িকে হত্যা করেন পুত্রবধূ

কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার সুবর্ণপুর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক সৈয়দ বিল্লাল হোসেন ও তার স্ত্রী সফুরা খাতুনকে কম্বলচাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন পুত্রবধূ নাজমুন নাহার চৌধুরী ওরফে শিউলী (২৫)। মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মো. আবদুর রহীম।

এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী শিউলী, তার খালাতো ভাই জহিরুল ইসলাম সানি (১৯) ও আরেক সহযোগী মেহেদী হাসান তুহিনকে (১৮) গ্রেফতার করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে মতবিরোধ চলছিল শিউলীর। তার স্বামী সৈয়দ আমান উল্লাহ ওমানে থাকেন। এ কারণে পারিবারিক এসব বিরোধে স্বামীকে পাশে পাচ্ছিলেন না তিনি। এর জের ধরে রাগে-ক্ষোভে খালাতো ভাই সানি ও তার বন্ধু তুহিনকে সঙ্গে নিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুর রহীম বলেন, গত ৫ সেপ্টেম্বর রাতে কুমিল্লা শহরে বসবাসরত সানিকে কয়েকজন বন্ধু নিয়ে শ্বশুরবাড়ি আসতে বলেন শিউলী। রাত ৯টার দিকে বন্ধু মেহেদীকে নিয়ে আসেন সানি। তারা ঘরে ঢোকার কিছুক্ষণের মধ্যে ওড়না দিয়ে শাশুড়ি সফুরা বেগমের মুখ চেপে ধরেন শিউলী। তখন বাকি দুই জন হাত পা-বেঁধে ফেলেন। এর পর কম্বল চেপে শ্বাসরোধে সফুরাকে হত্যা করেন শিউলী। এ সময় বিল্লাল হোসেন ঘরের বাইরে ছিলেন। একটু পরে ঘরে ঢুকলে তাকেও একই কায়দায় হত্যা করা হয়।

হত্যার পর ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নিতে ঘরের আসবাব ভাঙচুর করেন তারা। শিউলীকে বেঁধে রেখে মুঠোফোন নিয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে সানি ও মেহেদী চলে যান। এ সময় হাতের রশি খুলে ‘ঘরে ডাকাতি হয়েছে’ বলে চিৎকার করতে থাকেন শিউলী। প্রতিবেশীরা ছুটে এসে বিল্লাল হোসেন ও সফুরার লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে রাত ১২টার দিকে লাশ উদ্ধার করে।

এরপর সন্দেহভাজন হিসেবে শিউলীকে আটক করে পুলিশ। সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন নিহত দম্পতির বড় মেয়ে সৈয়দা বিলকিছ আক্তার। মামলায় শিউলীসহ অজ্ঞাতনামা দুই জনকে আসামি করা হয়।