হাতি রক্ষায় আমরা ব্যর্থ হয়েছি: বনমন্ত্রী

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়কমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, ‘হাতি রক্ষার দায়িত্ব আমাদের। কিন্তু আমরা সবাই ব্যর্থ হয়েছি। সেই ব্যর্থতার দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে।’ মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম নগরীর রুবি গেট এলাকায় বন অ্যাকাডেমিতে এক অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

৩৮তম বিসিএস উত্তীর্ণ বন ক্যাডারে নিয়োগ পাওয়া সহকারী বন সংরক্ষকদের ওরিয়েন্টেশন কোর্সের এই সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি।

চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি হাতি হত্যার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘এখানে (চট্টগ্রাম) গত এক মাসে সাত-আটটি হাতি মারা গেছে। সেই সাত-আটটি হাতি মারা যাওয়ায় আমরা সরাসরি জড়িত নই। আমরা হাতি মারিনি। বন বিভাগের কোনও কর্মকর্তা-কর্মচারী এই হাতি মারেননি, কিন্তু আমরা দায়িত্ব এড়াতে পারি না।’

মন্ত্রী বলেন, ‘একটি হাতি ফসলের ক্ষতি করলে তার ক্ষতিপূরণ সরকার দিচ্ছে। আমার মন্ত্রণালয় দায়িত্ব নিচ্ছে। তাহলে কেন হাতি মারবে? আমার মৌলভীবাজার এলাকায় বন্য হাতি আসে। পনেরো-বিশটির মতো বন্যহাতি আজ একমাস ধরে পাহাড় থেকে নেমে ধান খেয়ে ফেলছে। কিন্তু সে জন্য কেউ তো হাতি মারে না। প্রশাসনকে বলে, “হাতি আমাদের ক্ষতি করছে”।’

তিনি বন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সতর্ক করে বলেন, ‘বাংলাদেশে জীববৈচিত্র্য, বন্যপ্রাণী রক্ষার সব দায়িত্ব বন বিভাগের। যেখানে যে কর্মকর্তা আছেন, সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে। আপনাদের এলাকায় যদি একটি বন্যপ্রাণী মারা যায়, তার জন্য আপনারা সবাই দায়ী। সেটি আপনাদের ব্যর্থতা। যে এলাকায় বন্যপ্রাণী মারা যাবে, সেই দায়িত্ব সেই এলাকার ফরেস্ট গার্ড থেকে ডিএফও-সিএফ পর্যন্ত সবার ব্যর্থতা।’

কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বনমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আপনারা কাজ করছেন, ঠিকই কাজ করছেন। তারপরও আলোচনা-সমালোচনা আছে। আমাদের মন্ত্রণালয় নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়। আপনারা মনে কষ্ট নেবেন না। আমি আপনাদের অনুরোধ করবো, হাতি রক্ষার দায়িত্ব আপনাদের, সেগুলোর ‍মৃত্যুর দায়িত্বও আপনাদের নিতে হবে। মানুষকে একটু বুঝিয়ে বলুন, “ফসলের ক্ষতি করলে তার ক্ষতিপূরণ আমরা দেবো, হাতি মারবেন না। হাতি মারলে আইনি ব্যবস্থা নেবো”।’