টেকনাফে এক বছরে ২৮৫ কোটি টাকার মাদক-চোরাই পণ্য জব্দ 

কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে ২০২১ সালে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের (ডিএনসি) পৃথক অভিযানে ২৮৪ কোটি ৮৮ লাখ ৩ হাজার ২৮৯ টাকার মাদক, স্বর্ণ ও বিভিন্ন চোরাই পণ্য জব্দ হয়েছে। এসব ঘটনায় হওয়া ৬৭৬টি মামলায় ৬২৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং পলাতক রয়েছে ৭৬ জন। এছাড়াও বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়েছেন পাঁচ জন। 

বিজিবির টেকনাফ-২ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার ও টেকনাফ ডিএনসি’র সহকারী পরিচালক সিরাজুল মুস্তফা মুকুল এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিজিবি কর্মকর্তা শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার জানান, ২০২১ সালে ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ডিসেম্বর পর্যন্ত টেকনাফের স্থল ও নৌপথের সীমান্ত এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৬১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৯ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এসব মাদকের আনুমানিক মূল্য ১৮৪ কোটি ৩ লাখ ১৯ হাজার ৭০০ টাকা। এসব ঘটনায় বন্দুকযুদ্ধে পাঁচ জন নিহত হয়েছেন। এ বিষয়ে ৪২৯টি মামলায় ৪১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয় এবং ৯ জন পলাতক রয়েছেন।

তিনি আরও জানান, অভিযানে ৯ কেজি ২২১ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ (আইস), ১৪ কেজি ৪৪৫ গ্রাম গাঁজা, ১৬৬ বোতল ফেনসিডিল, পাঁচ হাজার ৭৫১ ক্যান বার্মিজ বিয়ার, ৬৯৮ বোতল বিদেশি মদ, ২৩৮ লিটার চোলাই মদ জব্দ করা হয়। যার আনুমানিক মূল্য ৪৪ কোটি ৯৯ লাখ ২৩ হাজার ১০৭ টাকা। এসব ঘটনায় ৭২টি মামলায় ৩৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়, দুই জন পলাতক রয়েছেন। চার লাখ ৯৬ হাজার ১৭ টাকার ৯৫.২৮ গ্রাম স্বর্ণ উদ্ধারের ঘটনায় তিনটি মামলায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। 

এছাড়া ৯ কোটি ১৭ লাখ ৭ হাজার ২১৫ টাকার চোরাই পণ্য উদ্ধারের ঘটনায় ১৯৫ টি মামলায় ৭০ জনকে গ্রফতার করা হয়েছে। পলাতক রয়েছেন পাঁচ জন। পাশাপাশি ৮টি দেশীয় বন্দুক, একটি বিদেশি পিস্তল, তিন রাউন্ড তাজা কার্তুজ, কার্তুজের চারটি খালি খোসা, ছয়টি ধারালো কিরিচ উদ্ধার করা হয়েছে।

অপরদিকে, টেকনাফ ডিএনসি’র সহকারী পরিচালক সিরাজুল মুস্তফা মুকুল জানান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর টেকনাফের বিশেষ জোন বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে দুই কেজি ৮৬৫ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইস, ৯ লাখ ৪৮ হাজার ৯১ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, পাঁচ কেজি ৭৬২ গ্রাম গাঁজা, ১২৬ বিয়ার ক্যান, ৮০ হাজার ৫৩৫ লিটার চোলাই মদ, ১৬.৮০০ লিটার বিদেশি মদ ও ১.৪ কেজি সন্দিগ্ধ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছে। 

তিনি আরও জানান, এসব অভিযানে নগদ পাঁচ লাখ ৩১ হাজার ৫৫০ টাকা, পাঁচটি অস্ত্র ও ৩০ রাউন্ড গুলি, পাচার কাজে ব্যবহৃত দুটি ব্যাটারিচালিত টমটম, একটি পিকআপ, একটি ফিশিং বোট ও দুটি মোটরবাইক জব্দ করেছে। এসব মাদকের আনুমানিক মূল্য ৪৫ কোটি ৮৪ লাখ ৩৭ হাজার ২৫০ টাকা বলে জানান সিরাজুল মুস্তফা মুকুল। 

এসব ঘটনায় ১৭২টি মামলায় ১৭৩ জন গ্রেফতার ও ৬৫ জন পলাতক রয়েছে।

জব্দকৃত মালামাল ও মাদকের আনুমানিক মূল্য ৪৫ কোটি ৮৪ লাখ ৩৭ হাজার ২৫০ টাকা বলে জানিয়েছেন ডিএনসি’র সহকারী পরিচালক সিরাজুল মোস্তফা মুকুল।