ভিডিও ভাইরালের পর সেই ভূমি কর্মকর্তা বরখাস্ত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের ভলাকূট ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (তহশিলদার) আলমগীর মিয়া চৌধুরীকে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছে। ঘুস নেওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর তাকে বরখাস্ত করা হলো।

গত ১৩ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তাকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা-২০০৮) বিধি (১২ অনুযায়ী) ১৩ মার্চ থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। তবে বিধি মোতাবেক বরখাস্তকালে খোরপোষ ভাতা পাবেন।

জেলা প্রশাসনের একটি সূত্রমতে, ভূমি সংক্রান্ত সেবাপ্রত্যাশীদের সঙ্গে অসদাচরণ ও ঘুস লেনদেনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি ঘুষের টাকা টেবিলের ওপর রেখে আলমগীর মিয়া এর ফিরিস্তি তুলে ধরেন। ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে তিনি বলছেন, ‘টাকা আমি একা নেই না। অনেককে দিতে হয়। এমনকি অ্যাসিল্যান্ড নেন। সরকার একটা আইন করে রাখলেও এটাই স্টাইল।’ দুই মিনিট ৫১ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, আলমগীর মিয়া তার নিজ কার্যালয়ে বসে কাজের বিনিময়ে টাকা দাবি করে এর ব্যাখ্যা দেন। ঘুস হিসেবে পাওয়া ৫০০ টাকার নোট দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘এখান থেকে আমি ২০০ টাকা পাবো’।

এদিকে, ভলাকূট এলাকার শামীম মিয়া নামে এক যুবক তার বিরুদ্ধে সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে লিখিত অভিযোগও করেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, সেবাপ্রত্যাশীদের নাম প্রস্তাব, সার্ভে রিপোর্ট, নামজারি, ডিসিআর সংগ্রহ, মিসকেস ও খাজনা দাখিল থেকে শুরু করে সবকিছুতেই টাকা দিতে হয় আলমগীর মিয়াকে। অভিযোগের পর দিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ঘুস গ্রহণ ও এ নিয়ে দরকষাকষির একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। লিখিত অভিযোগ ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর গত ২ মার্চ সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয় থেকে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। পরে ৩ মার্চ লিখিত জবাব দেন অভিযুক্ত আলমগীর। লিখিত জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সরকারি কর্মচারী বিধিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থার সুপারিশ করা হয়।

তবে আলমগীর মিয়া শুরু থেকেই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন। তিনি জানান, এডিট করে কেউ তার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে।