ডায়রিয়া রোগীর চাপে খালি নেই শয্যা, বারান্দায় চিকিৎসা

চাঁদপুরে প্রতিদিনই উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এর ফলে মতলবের আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালে ডায়রিয়া ও কলেরায় আক্রান্ত রোগীর চাপ বেড়েই চলেছে। শুধু চাঁদপুর নয়, আশপাশের জেলা থেকে প্রতিদিনই শিশুসহ নানা বয়সী রোগীর ভিড় বাড়ছে এই বিশেষায়িত হাসপাতালে।

গত ২৪ ঘণ্টায় এ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩১৪ জন রোগী। ফলে ধারণক্ষমতা ছাড়িয়ে যাওয়ায় বারান্দায় অস্থায়ী শয্যা বসিয়ে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গরম, দূষিত পানি এবং রাস্তার পাশের খোলা খাবার খাওয়ার কারণে এমনটি হচ্ছে বলে ধারণা চিকিৎসকদের।

মতলব আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালের তথ্যমতে, প্রতিদিন গড়ে ৩০০-৩৫০ রোগী এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গত এক সপ্তাহে চিকিৎসা নিয়েছেন দুই হাজার ৫৩৬ রোগী। যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি।
এদিকে, চাঁদপুর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালেও প্রতিদিন ৪০-৫০ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হচ্ছেন।

আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালের ডিউটি ডাক্তার ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন, ‘এ সময়টা ডায়রিয়া ও কলেরার মৌসুম। এ বছরের চিত্রটা ভিন্ন। প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে রোগী ভর্তি হচ্ছেন। রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছি। তবুও কোনও রকম বিরক্ত না হয়ে সর্বোচ্চ সেবাটুকু দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

মতলব স্বাস্থ্য ও গবেষণা কেন্দ্র আইসিডিডিআর,বির প্রধান ডা. মো. আলফজল খান বলেন, ‘অতিরিক্ত গরম ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়তে পারে। প্রতিদিনই পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হয়ে প্রচুর পরিমাণে রোগী আমাদের হাসপাতালে এসে ভর্তি হচ্ছেন। আমরাও তাদের সাধ্যমতো সেবা দিয়ে যাচ্ছি। হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ৭০টি হলেও প্রতিদিন রোগী আসছেন তিন শতাধিক।’

তিনি বলেন, ‘ডায়রিয়া হচ্ছে পানিবাহিত রোগ। তাই দূষিত পানি, রাস্তার পাশের খোলা খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। বিশুদ্ধ পানি, টাটকা খাবার খেতে হবে। ঘন ঘন হাত ধুতে হবে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।’

চাঁদপুর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী গত কয়েক দিন ধরেই বেশি আসছে। বিভিন্ন ধরনের রোগীরা এখানে চিকিৎসা নেন। হাসপাতালটি ২৫০ শয্যার। কিন্তু সব ইউনিট মিলে রোগী থাকে ৩০০-৩৫০। তাই সবাইকে শয্যা দেয়া সম্ভব হয় না।’