বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে এলে গণপিটুনিতে মারা যাবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম।
শনিবার (১২ নভেম্বর) বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের নিয়াজ মোহাম্মদ স্টেডিয়ামে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
শেখ সেলিম বলেন, ‘ওয়ান/ইলেভেনের সরকারের কাছে তারেক রহমান মুচলেকা দিয়ে গেছে। লন্ডনে থাকে, বিরাট বড় বাসা, তার ইনকাম কী? বাংলাদেশের টাকা লুট করে নিয়ে সে এখন ভালো থাকে। আমরাই তো লন্ডন সরকারকে বলছি, তাকে আমাদের কাছে দাও। কিন্তু তারা দিচ্ছে না। সে দেশে আসলে গণপিটুনিতে মারা যাবে। হাওয়া ভবনে যাদের ডেকে অত্যাচার নির্যাতন করেছে, তারা এখন তাকে গণপিটুনি দেবে।’
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, ‘চোরের মায়ের বড় গলা। এখন চিৎকার করে বেড়াচ্ছে, ১০ ডিসেম্বরে তারা শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটাবে। দরকার হলে তারেককে নিয়ে আসবে, খালেদা জিয়াও জেলখানা থেকে মিটিংয়ে আসবে। তারেক আসুক না, আমরা চাই সে আসুক। ও তো খুনি, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় তার যাবজ্জীবন হয়েছে। দেশের টাকা পাচার করায় ৩৭ বছরের জেল হয়েছে। আসলে তাকে ৩৭ বছরের জেলখাটার ব্যবস্থা আমরা করে দেবো। আর খালেদা জিয়াও মুচলেকা দিয়েছে। তার ভাই-বোন শেখ হাসিনার কাছে গিয়ে বলেছে, ‘‘আমার বোন সাজাপ্রাপ্ত, সে আর রাজনীতি করবে না। তার তো শরীর খারাপ। আমার বোনকে বাসায় থাকার অনুমতি দেন’’। তারা (বিএনপি) এখন মুচলেকা পার্টি।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপি দেশকে পেছনের দিকে নিয়ে যেতে চায়। তারা নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে এবং আমাদেরকে ক্ষমতা থেকে নামিয়ে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন করছে। তাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, ২০০৬ সালে ৩ মাসের তত্ত্বাবধায়ক সরকার দুই বছর ক্ষমতা পরিচালনা করেছিল। তারা বয়স বাড়িয়ে তাদের পছন্দের একজন বিচারপতিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান বানানো চেষ্টা করেছিল। সে সময়ে তারা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে হেনস্থা করেছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার চেষ্টা করে জেলখানায় পাঠিয়েছিল। বেগম খালেদা জিয়া যে মামলায় এখন সাজাপ্রাপ্ত সেই মামলা তত্ত্বাবধায়ক সরকারই দিয়েছিল। তারা এখনও সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়। সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার তারেক রহমানকে মন মাইর দিয়েছিল যে, বিমানবন্দরে হেঁটে যেতে পারেনি। তাকে হুইল চেয়ারে করে নিয়ে যেতে হয়েছিল। আর তারা এখনও সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই, ন্যাড়া বেলতলায় একবারই যায়। এই দেশে আর কখনও তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসতে দেওয়া হবে না। আগামী নির্বাচন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে হবে এবং অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হবে। যদি বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ না নেয়, তাহলে সংসদে সম্মানজনক কোনও স্থান পাবে না। এই সম্মেলনের মাধ্যমে শপথ নিতে হবে, আগামী মাস (ডিসেম্বর) থেকে আওয়ামী লীগ মাঠে থাকবে নির্বাচন পর্যন্ত। এই দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপক্ষে কোনও শক্তিকে রাখা যাবে না। সেই অপশক্তিকে রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করতে আমরা সব সময় প্রস্তুত থাকবো।’
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। সম্মেলন উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর প্রমুখ।