ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্ব, বাবার লাশ দাফন আটকে দিয়েছে সন্তানরা

চট্টগ্রামে অবসরের টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্বে বাবার লাশ দাফন আটকে রেখেছে সন্তানরা। ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কেরানী বাপের বাড়িতে।

স্থানীয়রা জানান, শনিবার সন্ধ্যা সাতটায় নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের বাসিন্দা মনির আহমদ (৬৫)। এরপর তার লাশ নিয়ে আসা হয় গ্রামের বাড়িতে। তার ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের দাবি, তার তিন বোন চিকিৎসা করানোর নামে বাবার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে থাকা চাকরির অবসরের টাকা মেরে দিয়েছে। ওই টাকার ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত বাবার লাশ দাফন করতে দেবেন না। এ নিয়ে ভাই বোনদের মধ্যে সৃষ্টি হয় চরম দ্বন্দ্ব। পরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অ্যাম্বুলেন্স এনে লাশ রাখা হয়।

মনির আহমেদের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমার বাবা পদ্মা অয়েল কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। অবসরের পর ক্যানসারে আক্রান্ত হন। মেজো বোন বেবি আকতার আমার বাবাকে মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়ার নাম করে ব্যাংক থেকে ৩০ লাখ টাকা তুলে নিয়েছে। আমার ছোট ভাই সৌদিপ্রবাসী আলমগীর রওনা দিয়েছেন। তিনি দেশে এলে টাকার সমঝোতার পর বাবার লাশ দাফন হবে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. সাইফুদ্দিন বলেন, ভাই-বোনদের মধ্যে ব্যাংকে রেখে যাওয়া বাবার টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে লাশ দাফন আটকে রেখেছে। সড়কে গাড়িতে রয়েছে লাশ। টাকার সমঝোতার পর নাকি লাশ দাফন করা হবে। বিষয়টি সামাজিকভাবে সমঝোতার চেষ্টা করছি।

কর্ণফুলী উপজেলার বড় উঠান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. দিদারুল আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ছেলেরা বাবার চিকিৎসায় কোনও অর্থ ব্যয় করেনি। মেয়েরা বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করিয়েছে। তবে চিকিৎসার খরচ দেওয়া হয় মনির আহমেদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে। এতে অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। তবে তার ছেলেরা দাবি করছে বোনেরা চিকিৎসার নামে টাকা মেরে দিয়েছে। কত টাকা ব্যাংক থেকে নেওয়া হয়েছে এবং হাসপাতালে কত টাকা পরিশোধ করা হয়েছে ওই টাকার হিসেব পাওয়ার পর মনির আহমেদের লাশ দাফন করা হবে বলে ছেলে জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছে। এ কারণে শনিবার সন্ধ্যা থেকে এখন পর্যন্ত লাশ দাফন করা হয়নি।

কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল মাহমুদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, মনির আহমেদের তিন মেয়ে ও দুই ছেলে। এরমধ্যে এক মেয়ে নাকি বাবার অ্যাকাউন্ট থেকে ৩০ লাখ টাকা ট্রান্সফার করে নিয়ে গেছে। অন্যরা টাকা পায়নি। এ কারণে দ্বন্দ্বে আজ পর্যন্ত বাবার লাশ তারা দাফন করতে দেয়নি। কাল সকাল ৯টায় দাফন করা হবে।