মোটরসাকেলের সঙ্গে রিকশা লাগায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংঘর্ষে যুবক নিহত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে দুই দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে ফয়সাল আহামেদ নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন পুলিশ, সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ২৫ জন।

শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) রাতে উপজেলার কালিকচ্ছ বাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহতের পরিবারের দাবি, পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। তবে দাবিটি প্রত্যাখ্যান করেছে পুলিশ। আহতদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালসহ স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

এলাকাবাসী ও নিহতের স্বজনেরা জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ বাজারে কালিকচ্ছ ইউনিয়নের কদমতলী গ্রামের ইকবালের চৌকিদারের ছেলে আকাশের অটোরিকশার সঙ্গে একই ইউনিয়নের ধরন্তী মূলবর্গ গ্রামের সাবেক মেম্বার হুমায়ুন মিয়ার ছেলে তোফাজ্জলের মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগে। এ নিয়ে গতকাল বিকালে তাদের মধ্যে প্রথমে বাগবিতণ্ডা ও পরে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জেরে আজ সন্ধ্যায় মোটরসাইকেল চালক তোফাজ্জলের লোকজন কালিকচ্ছ বাজারে এসে আবারও আকাশের ওপর হামলা করে। এতে গুরুতর আহত হন তিনি।

এ ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শুক্রবার সন্ধ্যায় ইফতারের পর কালিকচ্ছ বাজারে দুই গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় কালিকচ্ছ বাজারের বেশ কয়েকটি দোকানপাট ভাঙচুর হয়। পরে খবর পেয়ে সরাইল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে টিয়ারশেল এবং গুলি ছোড়ে। এ সময় ফয়সাল আহমেদ নামে এক যুবক নিহত হন। আহত হন কমপক্ষে ২৫ জন। নিহতের স্বজনদের দাবি, পুলিশের গুলিতে ফয়সালের মৃত্যু হয়েছে।

নিহতের মা হালিমা খাতুন বলেন, আমার ছেলে ঝগড়ার কিছুই জানে না। মারামারি দেখে দোকান বন্ধ করে আসার সময় পুলিশ তাকে গুলি করেছে। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।

নিহতের নানা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ বলেন, আমাদের বাড়ির সামনে নিজের দোকানে ছিল ফয়সাল। পরে মারামারি দেখে দোকান বন্ধ করে বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল। এ সময় পুলিশ এসে তাকে গুলি করে। আমার নাতি ঝগড়া সম্পর্কে কিছুই জানে না। তাকে এভাবে গুলি করে হত্যা করেছে পুলিশ। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।

ঘটনার খবর পেয়ে সরাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর হাসপাতালে ছুটে আসেন। তিনি এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্ত করে দায়ীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তানভীর চৌধুরী জানান, মৃত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।

এদিকে, ঘটনার খবর পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ওসি এমরান হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ হাসপাতালে এসে ঘটনার খোঁজ খবর নেন। এ সময় তিনি দাবি করেন, সংঘর্ষ চলাকালে অসংখ্য ককটেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। ককটেলের স্প্লিন্টারে হয়তো সে মারা গেছে। বর্তমানে এলাকার চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরবর্তী সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।