কক্সবাজারে পাহাড় ধসে চার জনের মৃত্যু, লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি

কক্সবাজারে ভারী বর্ষণে পাহাড় ধসে দুই রোহিঙ্গাসহ চার জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন আরও দুই জন। অপরদিকে টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জেলার কয়েকটি উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে।

চকরিয়া, পেকুয়া, রামু সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের ৬০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে এসব এলাকার দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। মাতামুহুরী ও বাকখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মাতামুহুরী নদীতে ঢলের পানির সঙ্গে আসা লাকড়ি সংগ্রহ করতে গিয়ে নদীর লক্ষারচর পয়েন্টে এক যুবক ঢলের পানির সঙ্গে ভেসে গেছেন।

উখিয়া ৮নং এপিবিএন পুলিশের অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি আমির জাফর জানান, টানা ভারী বর্ষণ চলাকালে আজ বিকালে উখিয়া উপজেলার বালুখালী ৯ নম্বর ক্যাম্পের এ ব্লকে পাহাড় ধসে আনোয়ারুল ইসলামের ঘরের ওপর পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের টিম রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবক এসে মাটি খুঁড়ে আনোয়ারুলের স্ত্রী জান্নাত আরা ও তার দুই বছর বয়সী মেয়ের লাশ উদ্ধার করে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ান জানান, টানা বর্ষণে চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে একটি পাহাড় ধসে পড়লে বাড়ির দেয়াল চাপায় দুই শিশু মারা গেছে। 

কক্সবাজার২

এদিকে, গত পাঁচ দিন ধরে কক্সবাজারে টানা ভারী বর্ষণ হচ্ছে। একইসঙ্গে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি লোকালয়ে ঢুকছে। রবিবার রাত থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি বেড়েছে। পানিতে চকরিয়া উপজেলার কাকারা, সুরাজপুর-মানিকপুর, বরইতলী, চিরিঙ্গা, লক্ষ্যারচর, কৈয়ারবিল, ফাসিয়াখালী চকরিয়া পৌরসভার বিএমচর পেকুয়া সদর ইউনিয়ন রামু উপজেলার গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়া, কাউয়ার রাজারকুল ইউনিয়নে বেশিরভাগ গ্রামে বন্যার পানি ঢুকেছে। এসব গ্রামের সড়কগুলোও পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের চকরিয়া উপজেলা কর্মকর্তা জামাল মোর্শেদ জানান, ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে মাতামুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মাতামুহুরী নদীর ঢলের পানির তোড়ে পেকুয়া উপজেলার মেহেরনামা বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। এ ছাড়া আরও একাধিক এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ান বলেন, পাহাড়ি ঢলের পানি হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় এই বন্যা দেখা দেয়। পাহাড়ি ঢলে নদী ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থান করা লোকজনকে সমতলের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূর্বিতা চাকমা জানান, পাহাড়ি ঢলে এই উপজেলার রাজাখালী, উজানটিয়া মগনামা, টৈটং, বারবাকিয়া, শিলখালীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।