ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম ওরফে শিউলি আজাদের আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার (০৭ অক্টোবর) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক স্বাগত সাম্য এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সরাইল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুর রহমান খান পাঠান বলেন, ‘১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।’
এর আগে রবিবার রাতে ঢাকার নিকেতনের বাসা থেকে শিউলি আজাদকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। রাতেই তাকে সরাইল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। গত ৩ সেপ্টেম্বর সরাইল থানায় করা একটি হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে সোমবার সকালে আদালতে হাজির করা হয়।
সরাইল থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ৩ সেপ্টেম্বর শিউলি আজাদ, সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীসহ ৬৭ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সরাইল থানায় একটি হত্যা মামলা হয়। তিনি ওই মামলার ৪ নম্বর আসামি। উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের সুলতান উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এতে অজ্ঞাত আরও ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের বিরোধিতা করে ২০২১ সালের ২৮ মার্চ হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনের সময় সরাইল বিশ্বরোড মোড় এলাকায় আসামিদের গুলিতে নিহত হন উপজেলার কাটানিশার গ্রামের মুজান মিয়ার ছেলে লিটন মিয়া (২৭)। তিনি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক ছিলেন। ওই ঘটনায় মামলা করেন সুলতান উদ্দিন।
শিউলি আজাদের আইনজীবী জয়নাল উদ্দিন বলেন, ‘অসৎ উদ্দেশ্যে বাদী মামলাটি দায়ের করে একজন সাবেক সংসদ সদস্যের মানহানির চেষ্টা করছেন। নিহত লিটন মিয়ার সঙ্গে সুলতান উদ্দিনের (বাদী) কোনও আত্মীয়তার সম্পর্ক নেই। এমনকি সে প্রতিবেশী নয়। তবু মামলা করেছেন।’
বাদীপক্ষের আইনজীবী কামরুজ্জামান মামুন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কোর্ট পরিদর্শক মো. হাবিবুল্লাহ সরকার জানান, হত্যা মামলায় আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আট দিনের মঞ্জুর করেন বিচারক। পরে তাকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শিউলি আজাদ সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। তিনি সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি প্রয়াত এ কে এম ইকবাল আজাদের স্ত্রী। ইকবাল আজাদ নিহত হওয়ার দুই বছর পর ২০১৪ সালের ১০ ডিসেম্বর শিউলি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হন। ২০২২ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের মাধ্যমে দলের কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতাদের উপস্থিতিতে তিন জনের আংশিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক হন। দুই বছরেও ওই কমিটি পূর্ণাঙ্গ হয়নি। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি।