বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তার প্রেতাত্মারা রয়ে গেছে। ষড়যন্ত্রকারীরা বসে নেই। তারা নানা দাবি-দাওয়ার নামে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে।’
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর আব্বাস উদ্দিন খান মডেল কলেজ মাঠে জেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘গত ১৫ বছরে আমাদের লাখ লাখ নেতাকর্মী অত্যাচারিত হয়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন, গুম-খুন হয়েছেন। কিন্তু বিএনপি থেমে থাকেনি। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সবার ঐক্যবদ্ধতার মাধ্যমে আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচারকে বিদায় করেছে। এখন লক্ষ্য একটাই, দেশকে পুনর্গঠন করতে হবে। দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’
স্বৈরাচার পালিয়ে গেছে কিন্তু তার প্রেতাত্মারা রয়ে গেছে জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘এরা বিভিন্নভাবে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। সর্বোপরি দেশকে রক্ষা করতে গেলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ভোটের মাধ্যমে জনগণের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়ার পাশাপাশি জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘বহু অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করে বিএনপি নেতাকর্মীরা এগিয়ে গেছেন। কৃষি, শিল্প, শিক্ষা ব্যবস্থা বেকার সমস্যা সমাধানের বিষয়সহ সব পর্যায়ে দেশকে কীভাবে এগিয়ে নিতে হবে, তা ৩১ দফায় স্পষ্ট করে বলা হয়েছে। ২০ কোটি মানুষের চাষাবাদের জন্য খাল খনন করতে হবে। দেশের খালগুলো ভরাট হয়ে গেছে। সেই সমস্যা থেকেও আমাদের উত্তরণ ঘটাতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর জনগণের ভোট দেওয়ার উপায় ছিল না। কখনও আমরা দেখেছি, ডামি নির্বাচন, কখনও ভোটারবিহীন নির্বাচন, কখনও আমরা দেখেছি ভোট ডাকাতি। জনগণের ভোট দেওয়ার ক্ষমতাকে অস্ত্রের বলে কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। উন্নয়নের নামে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে। কোনও রকম জবাবদিহিতা ছিল না বলে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। দলীয় লোক দিয়ে বিচার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সে কারণে রাষ্ট্রের প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে গেছে।’
বিচার ব্যবস্থাকে পুনর্গঠন করার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এই কাজগুলো পুনর্গঠন করতে পারলে রাষ্ট্র ব্যবস্থা উন্নত হবে। যে সমস্ত দলের এজেন্ডা হচ্ছে, এই দেশ ও দেশের জনগণ তাদের সবাইকে বিএনপি ঐক্যবদ্ধ রাখবে। আমরাও সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকব। বিএনপির শক্তি হচ্ছে জনগণের শক্তি।’
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, অর্থনীতি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহাবুব শ্যামল, জেলা বিএনপি নেতা কবির আহম্মেদ ভূঁইয়াসহ দলের কেন্দ্রীয় এবং জেলা উপজেলা পর্যায়ের নেতারা।
এদিকে বহুল কাঙ্ক্ষিত জেলা বিএনপির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই সমাবেশস্থলে এসে জড়ো হন তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। এতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে সমাবেশস্থল। সম্মেলন ঘিরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে যানজটের সৃষ্টি হয়।
সম্মেলনে নেতৃত্ব নির্বাচন সম্পর্কে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন অর্থাৎ কমিটি গঠন আজ হবে না। আগামী দিনে দলের সবার সঙ্গে কথা বলে কমিটি ঘোষণা করা হবে।’