জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘সরকারকে জিম্মি করার চেষ্টা করা হলে তার পরিণাম ভালো হবে না। জনগণ এসব কর্মকর্তাদের বিকল্প খুঁজে নেবে।’
সোমবার (২৬ মে) বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম উত্তর জেলায় সাংগঠনিক সফর কর্মসূচি শুরুর আগে নগরীর বিপ্লব উদ্যানের জমায়েতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘এখন সচিবালয়েও দেখছি আন্দোলন হচ্ছে, বিক্ষোভ হচ্ছে। এনবিআর সংস্কারে বাধা দেওয়া হচ্ছে। যখন ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থান চলছিল, তখন আপনারা শেখ হাসিনাকে সমর্থন জানিয়ে কালো ব্যাজ ধারণ করে অফিস করেছেন। এখন আপনারা হুমকি দেন, অফিস চলতে দেবেন না, অফিস বন্ধ করে রাখবেন।’
তিনি বলেন, ‘৫ আগস্ট আপনাদের এমন কোনও হিম্মত ছিল না যে, শেখ হাসিনার চোখে আঙুল দিয়ে তার ক্ষমতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন কিংবা কেউ পদত্যাগ করেননি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী আমাদের অসহায় দুর্ভোগের রেজিমেন্ট হিসেবে যদি কিছু পরিচিত হয়, সেটা হচ্ছে সচিবালয়। আর দুর্নীতির আঁতুড়ঘর হিসেবে পরিচিত হয়, সেটা এনবিআর।’
হাসনাত বলেন, ‘আমরা কঠিন ভাষায় বলতে চাই, ৫ অগাস্ট পর্যন্ত যদি ফ্যাসিস্ট সরকার না পড়তো, তাহলে শেখ হাসিনার সরকার টিকে যেত। অথচ এখন আপনারা সেই সরকারের পদে বসে চাকরি করছেন।’
এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘৫ আগস্ট-পরবর্তী বাংলাদেশে যদি আপনারা জনগণের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সরকারকে হুমকি-ধামকি দেন, সংস্কার কার্যক্রমে বাধা দেন, তাহলে মনে রাখবেন- জনগণ আপনাদের বিকল্প খুঁজে নেবে। ৫ আগস্ট পর্যন্ত কোনও সচিব, কোনও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী কি পদত্যাগ করেছিলেন? রাস্তায় সাধারণ নাগরিকদের সন্তানদের গুলি করে মারা হচ্ছিল, তখন একজন আমলা বা কর্মকর্তার পদত্যাগের খবর কি এসেছিল?’
তার ভাষ্য, ‘আজ যখন সরকার সংস্কার কার্যক্রম শুরু করেছে, তখন আপনারা বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন। যেখানে সহযোগিতা করার দরকার ছিল, সেখানে আপনারা প্রতিকূলতা সৃষ্টি করছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমার জীবন থাকতে, আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, হাসনাত আবদুল্লাহ বেঁচে থাকতে, বাংলাদেশের লাখ লাখ আবদুল্লাহ রয়েছে। এরা বেঁচে থাকতে যদি কার্যক্রমে বাধা বিশেষ করে সচিবালয় থেকে আসে, তাহলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তা কঠোরভাবে প্রতিরোধ করা হবে। আপনারা ভাববেন না, আপনাদের বিকল্প নেই, জনগণ আপনাদের বিকল্প খুঁজে নেবে।’
এ সময় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহর সঙ্গে চট্টগ্রাম উত্তর জেলায় দিনব্যাপী সাংগঠনিক সফরে রয়েছেন কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা। এ ছাড়াও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দও অংশ নিচ্ছেন।
তারা রাঙ্গুনিয়ার রোয়াজার হাট থেকে পথসভা শুরু করেছেন। দুপুর ১২টায় রাউজান বাসস্ট্যান্ডে ও দেড়টায় হাটহাজারী ডাকবাংলোয় সংক্ষিপ্ত কর্মসূচি পালন করেন। দুপুর আড়াইটায় ফটিকছড়ির বিবিরহাট বাসস্ট্যান্ডে, বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত মধ্যাহ্নভোজ ও নামাজের বিরতি পালন করবেন।
বিকাল সাড়ে ৫টায় সফরকারীরা অবস্থান নেবেন মীরসরাইয়ের বারইয়ার হাট বা মীরসরাই বাজারে। সফরের শেষ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে সন্ধ্যা ৭টায় সীতাকুণ্ড বাজারে।