‘শিশু কেন্দ্রের সংখ্যা না বাড়িয়ে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে’

NHEC Chairman (2)

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেছেন, শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের সংখ্যা,আয়তন ও শিশু অপরাধীর সংখ্যা না বাড়িয়ে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করতে হবে। বুধবার দুপুর ১টায় টঙ্গী শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের শিশুদের সঙ্গে কথা বলে তাদের খোঁজ খবর নেন।

প্রয়োজনে এসব আইন সংশোধন করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিশুদের মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নের সরকারের সঙ্গে কথা বলে ৬ মাসের মধ্যে এগুলো বাস্তবায়ন করতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন প্রস্তুত।

শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পঞ্চম শেণী পর্যন্ত শিক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। তিনশ’ শিশুর ধারণক্ষমতা সম্পন্ন এ কেন্দ্র চারশ’ শিশু রয়েছে। তাদের এ অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। এইচএসসি পর্যন্ত শিক্ষা বাস্তবায়ন করাসহ এই কেন্দ্রের ধারণ ক্ষমতা না বাড়িয়ে, স্কাইপির মাধ্যমে শিশুদের আদালতে হাজিরা নিশ্চিত করে মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

কাজী রিয়াজুল হক বলেন, এখানে থাকাকালে শিশুরা তাদের মৌলিক অধিকার অর্থাৎ চলাফেরা ও কথা বলার স্বাধীনতা কতটুকু উপভোগ করতে পারছে তা দেখতে এসেছি। অধিকাংশ শিশুর বিচার প্রক্রিয়া এখনও সম্পন্ন হয়নি। ফলে তাদের দোষী বলতে পারছি না। আদালত না বলা পর্যন্ত তাদের দোষী বলা যাবে না।

কাজী রিয়াজুল হক বলেন, অপরাধের শ্রেণীবিন্যাস বা মাত্রানুসারে শিশুদের আলাদা রাখতে হবে। ছোট অপরাধ করলে শিশুদের উন্নয়ন কেন্দ্রে না পাঠিয়ে খেলাধূলার সুযোগ করে দেওয়াসহ বাবা মা, সোসাইটি ও শিশু সদনে নিয়ে যেতে হবে। অপরাধ জগতের শিশুদের সঙ্গে তাদের রাখা যাবে না।

বিনা বিচারে থাকা শিশুদের তালিকা তৈরি করে আদালতের ও সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে চার্জশিট তৈরিসহ জামিন এবং রায়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

তিনি বলেন, শিশুদের বিচার বড়দের আদালতে হতে পারবে না। শিশুদের জন্য আলাদা আদালতে হতে হবে। যদি শিশু আইন যথাযথভাবে মানা হতো তা, হলে এখানে এসে এত শিশুকে দেখতে হতো না ।

চার’শ শিশুর জন্য এখানে কোনও চিকিৎসক নেই। এছাড়া মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুও রয়েছে। আমরা সরকারের সঙ্গে এসব বিষয়ে কথা বলবো। যাতে মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থাসহ উল্লেখিত অধিকার সংরক্ষণের ব্যাবস্থা করে। তা আগামী ৬ মাসের মধ্যে বাস্তবায়নের চেষ্টা করব।

তিনি বলেন, যেসব ক্ষেত্রে আইন সংশোধনের প্রয়োজন রয়েছে সেসব ক্ষেত্রে আইন সংশোধনের ব্যবস্থা নিবে সরকার। আদালতের মাধ্যমে ও ইউএনডিপির সহায়তায় মানবাধিকার কমিশন এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য তৈরি রয়েছে।

পরিদর্শনের সময় সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের বিচারপতি এম ইমান আলী, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পরিচালক শরীফ উদ্দিন, সহকারী পরিচালক রবিউল ইসলাম, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম আলম, সমাজসেবা অধিদফতরের উপ পরিচালক শংকর শরন সাহা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাখাওয়াত হোসেন, শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক শাহজাহান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

/জেবি/

আরও পড়তে পারেন: জেএমবি’র সারোয়ার-তামিম গ্রুপের আরও ২ সদস্য গ্রেফতার