নামে মিল থাকায় করাতকল মালিকের পরিবর্তে কারাগারে চা বিক্রেতা

চা বিক্রেতা রফিকুল ইসলামগাজীপুরের শ্রীপুরে নামে মিল থাকায় করাতকল মালিকের পরিবর্তে এক চা বিক্রেতাকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। পাঁচদিন ধরে চা দোকানি রফিকুল ইসলাম জেলখানায় রয়েছেন। বন বিভাগের মামলায় পরোয়ানাভুক্ত এক আসামির নামের সঙ্গে মিল থাকায় তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রফিকুল গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পশ্চিমখণ্ড দারগারচালা (মসজিদ মোড়) এলাকার নূর মোহাম্মদের ছেলে।

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বিকালে শ্রীপুর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) কফিল উদ্দিন তাকে চায়ের দোকান থেকে গ্রেফতার করেন।

মামলার প্রকৃত আসামির জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী নাম রফিকুল ইসলাম, জন্ম ১৬ জানুয়ারি ১৯৮০, বাবার নাম নূর মোহাম্মদ, মায়ের নাম রহিমা খাতুন। অপরদিকে গ্রেফতার হওয়া চা দোকানির জন্ম ২ এপ্রিল ১৯৭৭, বাবার নাম নূর মোহাম্মদ এবং মায়ের নাম জামিনা খাতুন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা এবং রফিকুল ইসলামের বাবা নূর মোহাম্মদ জানান, রফিকুলের নামে কখনও মামলা ছিল না। ছেলের চা বিক্রির টাকা দিয়েই সংসার চলে। কথা নেই বার্তা নেই শুক্রবার বিকালে পুলিশ এসে ছেলের নাম ও বাবার নাম জানতে চায়। পরে তার নামে ওয়ারেন্ট থাকার অভিযোগে তুলে নিয়ে যায়। এলাকার লোকজন বারবার বিষয়টি বলার পরও যাচাই-বাছাই ছাড়া তার ছেলেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

শ্রীপুর বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, লাইসেন্সবিহীন করাতকলে গজারি গাছের কাঠ কাটার অভিযোগে ২০১৫ সালের ৮ জুলাই মামলা হয়। মামলা করেন শ্রীপুর সদর বন বিট অফিসার সহিদুর রহমান। আসামি করা হয় কেওয়া পশ্চিমখণ্ডের বেগুনবাড়ি এলাকার নূর মোহাম্মদের ছেলে রফিকুল ইসলামকে। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (বন) আদালতে এই মামলা হয়। এ মামলায় রফিকুলের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করে শ্রীপুর থানাকে গ্রেফতারের নির্দেশ পাঠানো হয়।

অপরদিকে এই মামলার প্রকৃত আসামি নূর মোহাম্মদের ছেলে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি করাতকলের ব্যবসা করি। মামলাটি আমার বিরুদ্ধেই করা হয়েছিল। উচ্চ আদালত থেকে নেওয়া জামিনে আমি বাইরে আছি।’

এ বিষয়ে শ্রীপুর পৌরসভার মেয়র আনিছুর রহমান বলেন, ‘পুলিশের ভুলের কারণে একজন সাধারণ মানুষ জেল খাটছেন। বিষয়টি দুঃখজনক।’

শ্রীপুর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) কফিল উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘চা দোকানি রফিকুলকে গ্রেফতারের পর দীর্ঘ সময় থানায় রাখা হয়। তখন কেউ ব্যাপারটি আমাদের জানায়নি।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, ‘মামলাটি আদালতে দায়ের করা। দুই জনের নাম, বাবার নাম ও এলাকা একই। থানার মামলা হলে সে ক্ষেত্রে আমাদের কিছু করার ছিল। এখন আদালত সিদ্ধান্ত নেবে সে প্রকৃত আসামি কিনা। তবে যতদূর জানতে পেরেছি গ্রেফতারকৃত রফিকুল চা দোকানি। অপর রফিকুল করাতকলের মালিক।’