জুস কারখানায় আগুন

পাঁচতলায় কোনও লাশ পাওয়া যায়নি

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসেন জানিয়েছেন, সেজান জুস কারখানার ষষ্ঠতলার আগুন এখন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে কিছু ধোঁয়া বের হচ্ছে। ডাম্পিং করার সময় যেসব বস্তুতে আগুন জ্বলছিলো সেখানে পানি দিলে ধোঁয়া বের হচ্ছে। পাঁচতলায় খোঁজ করেও কোনও লাশ পাওয়া যায়নি। সকালের মধ্যেই অভিযান শেষ হতে পারে।

হাসেম ফুড বেভারেজ লিমিটেডের কারখানায় লাগা আগুনের সার্বিক বিষয়ে শুক্রবার (০৯ জুলাই) রাতে তিনি এ কথা বলেন।

মহাপরিচালক বলেন, এই ভবনটি পরিদর্শন করে দেখা গেছে, প্রতিটি ফ্লোরে কারখানার পাশাপাশি গোডাউন ছিলো। সেখানে বিপুল পরিমাণ ধার্য পদার্থ ছিলো। যে কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়েছে এবং মৃত্যু এবং ক্ষয়ক্ষতি বেড়েছে।

তিনি জানান, রাতেরই পুরো ছয়তলা ভবনে ডাম্পিংয়ের কাজ শেষ হয়ে যাবে। পাঁচতলার ফ্লোরে খোঁজ করে কোনও লাশ পাওয়া যায়নি। পুরো ঘটনাটি শেষ করার আগে আগামীকাল সকালে শেষবারের মতো তল্লাশি করে অভিযান সমাপ্ত করা হবে।

এদিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে ফায়ারের পরিচালক (অপারেশন্স) লে. কর্নেল জিল্লুর রহমানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।

জিল্লুর রহমান বলেন, এই কারখানাটির আয়তন প্রায় ৪০ হাজার ফুট। কিন্তু এত বড় ভবনে দুটি সিঁড়ি কোনওভাবে হয় না। এখানে কমপক্ষে চারটি সিঁড়ি থাকা প্রয়োজন ছিলো। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে মালিকপক্ষের কতটুকু গাফিলতি রয়েছে এবং আগুনের কারণ বের হয়ে আসবে।

এদিকে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫২ জনের লাশ উদ্ধার করা হলেও সেজান জুস কারখানার সামনে ৫১ শ্রমিককে খুঁজে বেড়াচ্ছেন তাদের পরিবারের সদস্যরা। তাদের খোঁজে বৃহস্পতিবার (০৮ জুলাই) সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত কারখানার সামনে অপেক্ষা করছেন তারা।

প্রসঙ্গত, রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সেজান জুস কারখানায় বৃহস্পতিবার (০৮ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৫টায় আগুনের সূত্রপাত হয়। কারখানার ছয়তলা ভবনটিতে তখন প্রায় ৪০০-এর বেশি কর্মী কাজ করছিলেন। কারখানায় প্লাস্টিক, কাগজসহ মোড়কিকরণের প্রচুর সরঞ্জাম থাকায় আগুন মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে সব ফ্লোরে।

প্রচুর পরিমাণ দাহ্য পদার্থ থাকায় কয়েকটি ফ্লোরের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিটের ২০ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। শুক্রবার (০৯ জুলাই) দুপুরে কারখানার ভেতর থেকে ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পরপরই তিনজন নিহত হয়। সবমিলিয়ে, এ পর্যন্ত ৫২ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। কারখানায় আগুনের ঘটনায় প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন। ঘটনা তদন্তে তিনটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।