ধর্ষণের পর গায়ে আগুন দেওয়া গৃহবধূর মৃত্যু

নরসিংদীর রায়পুরায় ধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার শিকার সেই গৃহবধূ (৩০) মারা গেছেন। সোমবার (০৯ আগস্ট) ভোরে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। ভুক্তভোগীর ভাই বিষয়টি বাংলা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও ভুক্তভোগীর স্বজনরা জানান, রায়পুরার বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের সোবানপুর গ্রামের ওই নারীর সঙ্গে মরজাল এলাকার এক প্রবাসীর বিয়ে হয়। তাদের ১০ বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে। শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার ও সন্তানের ওপর কারণে-অকারণে নির্যাতন চালাতো। বছরখানেক আগে দেবর আলী হোসেন তার মেয়ের পায়ে দা দিয়ে কোপ দেয়।

এ ঘটনায় একটি মামলা করা হয়। এরপর থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন মামলা তুলে নিতে চাপ দিতে থাকে। এতে রাজি না হওয়ায় নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এরপর তিনি বাবার বাড়ি চলে যান। এরই মধ্যে গত শনিবার টিকা দেওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে আসে শ্বশুরবাড়ির লোকজন।

তারা আরও জানান, গতকাল বিকালে দেবর আলী হোসেন, ননদের ছেলে শাহরিয়ার, ননদ তাসলিমা বেগম ও জা রহিমা বেগমের সঙ্গে শ্বশুরবাড়ি থেকে সিএনজিযোগে টিকা দেওয়ার জন্য বের হন ওই নারী। সিএনজিতে উঠলে কিছুক্ষণ পর তার চোখ-মুখ বেঁধে ফেলে তারা। রাতে নির্জন স্থানে নিয়ে সিএনজি থেকে নামিয়ে তাকে ধর্ষণ করে আলী হোসেন।

এরপর রায়পুরা-বারৈচা সড়কের পাশে লোচনপুর এলাকার একটি বাঁশঝাড়ের পাশে নিয়ে যায়। সেখানে তরল জাতীয় কিছু শরীরে ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় আলী হোসেন। চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শনিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। আগুনে তার শরীরের প্রায় ৮০ শতাংশ পুড়ে যায়।

রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা জানান, গতকাল রবিবার দুপুরে ওই নারীর ছোট ভাই বাদী হয়ে চার জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মামলার আগেই এ ঘটনায় জড়িত দুই জনকে আটক করে পুলিশ। তারা হলো রায়পুরার মরজাল এলাকার হাফিজ উদ্দিন মুন্সীর ছেলে আলী হোসেন (৩২) এবং তার ভাগনে ও কাজী আলতাফ হোসেনের ছেলে মো. শাহরিয়ার (১৮)। তাদের ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।