ধর্ষণের পর পুলিশ সদস্যের স্ত্রীকে হত্যা করে তারা

মানিকগঞ্জ শহরের রিজার্ভ ট্যাংক এলাকায় পুলিশ সদস্যের স্ত্রী হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়েছে। এ ঘটনায় এক নারীসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতাররা হলো—রাজবাড়ী সদর উপজেলার হুগলাডাঙ্গি গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে মো. কবির হোসেন (৩০), তার স্ত্রী আঁখি মনি লিপি (২০), একই গ্রামের জিতু সরদারের ছেলে রিয়াজ উদ্দিন সরদার (২৬) ও বগুড়ার ভান্ডারবাড়ি গ্রামের শহিদ মন্ডলের ছেলে মো. শাকিল হাসান (১৯)। সাভারের আশুলিয়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন তারা।

বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করে এসব তথ্য জানান মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান। এ সময় মামলার তদারকি কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর সাহা পিপিএম, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জামিনুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মামলার তদারকি কর্তকর্তা সুপার ভাস্কর সাহা জানান, হত্যার শিকার নারীর পূর্ব পরিচিত আঁখি মনি। স্বামী কবির হোসেনকে নিয়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে আঁখি। পরিকল্পনা অনুযায়ী শুক্রবার রাতে সে ভুক্তভোগীর বাড়িতে আসে। রাত ১০টার দিকে তার ছেলে ও মেয়ে ঘুমিয়ে পড়লে তিন সহযোগীকে বন্ধুর পরিচয় দিয়ে বাড়িতে ঢোকায় আঁখি। আড্ডা দেওয়ার এক পর্যায়ে তাকে ঘুমের ওষুধসহ পানীয় খাওয়ায়। অচেতন হয়ে পড়লে রিয়াজ নামের একজন তাকে ধর্ষণ করে। এরপর হাত, পা ও মুখ বেঁধে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। রাত ৪টার দিকে চারজনই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে চুরি হওয়া তিনটি মোবাইল ফোন, একটি স্বর্ণের পায়েল, তিনটি স্বর্ণের কানের দুল, একটি স্বর্ণের ব্রেসলেট, একটি স্বর্ণের লকেট, দুইটি স্বর্ণের দুল, একটি রুপার নুপুর ও নগদ পাঁচ হাজার টাকা উদ্ধার হয়েছে।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান জানান, প্রথমে সাভারের আশুলিয়া থেকে আঁখি মনিকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যমতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বাকি তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে চারজনই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েছে। তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতের কাছে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে।