‘ক্ষোভের বশে’ ৯৯৯-এ ছেলের ফোন, বাবার লাশ গেলো মর্গে

পরিবার ও স্থানীয়দের মতে, সকালে হাঁটতে বের হয়ে অটোরিকশার ধাক্কায় প্রাণ হারান জালাল উদ্দিন (৭০)। তবে মরদেহ দাফনের ঠিক আগ মুহূর্তে তারই মেজো ছেলে ফোন করে ৯৯৯-এ। আটকে যায় জানাজা ও দাফন। এরপর জালাল উদ্দিনের মরদেহ চলে যায় মর্গে। ঘটনাটি মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর উপজেলা শ্রীবাড়ী গ্রামের।

জালাল উদ্দিন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) অবসরপ্রাপ্ত একজন কর্মচারী ছিলেন।

ঘিওর থানা পুলিশ, পারিবারিক সূত্র ও স্থানীয়রা জানান, জালাল উদ্দিনের মেজো ছেলে নুরুল ইসলামের সঙ্গে পরিবারের সম্পর্ক ভালো ছিল না। বেশ ক’বছর আগেই তিনি বাড়ি ছেড়েছেন। বাবা-মার খোঁজও নিতেন না। তবে মাঝে মধ্যে এলাকায় এসে বাবা ও ভাইদের হুমকি-ধামকি দিতেন। বছরখানেক আগে এ বিষয়ে নুরুল ইসলামের নামে তার বাবা জালাল উদ্দিন থানায় সাধারণ ডায়েরিও করেছেন। গ্রাম্য সালিসও হয়েছে কয়েকবার।

জরুরি সেবা ৯৯৯

বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) সকালে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিলে জালালের মৃত্যু হয়। এর পর সন্তান ও আত্মীয়রা তার জানাজাসহ দাফনের প্রস্তুতি নেয়। মৃত্যুর খবর পেয়ে হাজির হন মেজো ছেলে নুরুল ইসলাম। তিনি জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে অভিযোগ করেন তার পিতাকে তিন ভাই মিলে হত্যা করেছে। ফোন পেয়ে ঘিওর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পারে।

জালাল উদ্দিনের বড় ছেলে তারা মিয়া জানান, তার ভাই নুরুল নেশাগ্রস্ত। সন্তান ও স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে গেছে। দীর্ঘদিন নিজেকে সম্পত্তির ওয়ারিশ দাবি করে আসছিল নিজেকে। কিন্তু বাবা তাকে সম্পত্তি দিতে রাজি না হওয়ায় মারপিট করতে আসতো। বছরখানেক আগে তার বিরুদ্ধে থানায় জিডি করেছিলেন বাবা। সেই ক্ষোভেই দাফন করতে দেয়নি নুরুল ইসলাম।

ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াজুদ্দিন আহমেদ বিপ্লব জানান, ৯৯৯-এ ফোন পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুনরায় পুলিশ পাঠানো হয়। সুরতহাল রিপোর্ট এবং স্থানীয়দের তথ্যমতে জালাল উদ্দিন অটোরিকশার ধাক্কায় মারা গেছেন। কিন্তু তার মেজো ছেলের অভিযোগ—  ভাইয়েরা মিলেই বাবাকে হত্যা করেছে। এ কারণে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আরশ্বাদ উল্লাহ জানান, কফিনে করে জালাল উদ্দিনের মরদেহ রাতে হাসপাতাল মর্গে নিয়ে যায় পুলিশ।